সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২
The Daily Ittefaq

রাখাইনের রাজধানী দখলে নিতে জান্তার সঙ্গে আরাকান আর্মির সংঘর্ষ চলছে

আপডেট : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৯:১৬

রাখাইনের রাজধানী সিত্তে শহর দখলে নিতে মিয়ানমারের জান্তা বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহী আরাকান আর্মির ব্যাপক সংঘর্ষ চলছে। গত শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) থেকে এই অঞ্চলে একের পর এক কামানের গোলা দিয়ে একে অপরকে আঘাত করছে।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ইরাবতি জানিয়েছে, সিত্তে উত্তর রাখাইনের একমাত্র শহর, যা এখনো জান্তার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। দক্ষিণ রাখাইনে নিয়ন্ত্রণ সংকুচিত হয়ে মাত্র দুটি জনপদ অবশিষ্ট আছে- মানাউং ও কিয়াউকফিউ।

এছাড়া বাকি ১৪টি রাখাইন টাউনশিপ ২০২৩ সালের নভেম্বরে অভিযান শুরুর পর থেকে দখল করে নিয়েছে আরাকান আর্মি।

ইরাবতি জানিয়েছে, গত ডিসেম্বর থেকে সিত্তে শহরে থাকা জান্তা ব্যাটালিয়ন আরাকান আর্মির দখলে থাকা প্রতিবেশী অঞ্চলগুলোতে এলোপাতাড়ি কামান নিক্ষেপ করছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, আরাকান আর্মি গত শুক্রবার থেকে পাল্টা জবাব দিতে শুরু করে। সপ্তাহান্তে ব্যাপক আর্টিলারি হামলা চালানো হয়েছে।

এক বাসিন্দা নাম না প্রকাশ করার সর্তে বলছিলেন, সেনাবাহিনী টানা ১০ থেকে ২০টি কামানের গোলা নিক্ষেপ করছে। আরাকান আর্মি প্রতিবার বিভিন্ন স্থান থেকে দুই বা তিনটি শেল নিক্ষেপ করে জবাব দিচ্ছে। পাউকতাও, পোন্নাগিয়ুন ও রাথেডং টাউনশিপ সীমান্তের কাছে গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে।

একটি সূত্র ইরাবতীকে জানিয়েছে, আরাকান আর্মি ও তার মিত্ররা সিত্তে দখলের জন্য এবারের অভিযান শুরু করেছে।

আরাকানের সিত্তে শহরে আঞ্চলিক অপারেশন, আর্টিলারি, পদাতিক ও হালকা পদাতিক ব্যাটালিয়ন এবং একটি নৌ ঘাঁটিসহ প্রায় ১০টি জান্তা ব্যাটালিয়ন রয়েছে।

একজন সামরিক বিশ্লেষক বলেন, আমি মনে করি আরাকান আর্মি এখনো সিত্তেতে সরকারের দুর্বল জায়গাগুলো চিহ্নিত করার চেষ্টা করছে। তারা সেখান থেকে পরে হামলা করবে।

সামরিক বিশ্লেষকরা বলছেন, রাখাইনের রাজধানী দখল করা আরাকান আর্মির জন্য এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। তারা এরই মধ্যে জান্তার পশ্চিমাঞ্চলীয় কমান্ডের আবাসস্থল অ্যান এবং মংডুসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা দখল করে নিয়েছে।

এদিকে, সিত্তে শহরে আটকে পড়া বাসিন্দারা খাদ্য ও ওষুধের ঘাটতির পাশাপাশি দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কথা জানিয়েছেন। আরাকান আর্মির সঙ্গে নাগরিকদের সম্পৃক্ততার অভিযোগ এনে শাসকগোষ্ঠীর সদস্যরা নির্বিচারে গ্রেপ্তার চালাচ্ছে।

স্থানীয় এক বাসিন্দা ইরাবতীকে বলেন, সবাই কষ্ট পাচ্ছে। কিন্তু তারা সবাই আশা করছে বর্ষা মৌসুমের মধ্যে আরাকান আর্মি সিত্তেতে প্রবেশ করবে। তারা লড়াইয়ের পরে তাদের স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার করবে। এখন কোনো স্বাধীনতা নেই, আমরা অনাহারে দিন কাটাচ্ছি। আমরা অচলাবস্থায় আটকে থাকতে চাই না।

ইরাবতি জানিয়েছে, রাখাইনের ১৭টি টাউনশিপের মধ্যে ১৪টি দখলের পর আরাকান আর্মি সীমান্ত পেরিয়ে আইয়ারওয়াদি, মাগওয়ে ও বাগো অঞ্চলে প্রবেশ করেছে। তবে সিত্তেতে জাতিগত সেনাবাহিনী এখন তার অবশিষ্ট জনপদগুলোর উপর নিয়ন্ত্রণকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে।

ইত্তেফাক/এসকে