বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫, ৬ চৈত্র ১৪৩১
The Daily Ittefaq

পিরোজপুরের ১৭ প্রকল্পে ১৬শ কোটি টাকা লোপাট

আপডেট : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৫:৪৪

পিরোজপুরের ১৭টি উন্নয়ন প্রকল্পে প্রায় এক হাজার ৬০০ কোটি টাকা দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। সাবেক মুখ্য সচিব, সাবেক মৎস ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী, সাবেক সংসদ সদস্য এবং সাবেক দুজন উপজেলা চেয়ারম্যান এই টাকা লোপাটে জড়িত। তাদের সহায়তা করেছেন স্থানীয় সরকার অধিদপ্তরের ১১ জন প্রকৌশলী।

সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টায় ঢাকা দক্ষিণ নগর ভবনে ঘুষ, দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন প্রদান এবং ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

২০২০ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত মোট ১৭টি উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেয় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এই সব প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ ছিল সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকারও বেশি। কাজের তালিকায় ছিল সড়কের অবকাঠামো, ব্রিজ নির্মাণ থেকে শুরু করে বড় বড় সব প্রকল্প। কিন্তু প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় ওঠে নানা অনিয়মের অভিযোগ। এরপর তদন্তে নামে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর।

সবচেয়ে বড় অভিযোগ, কোনো কাজ না করেই তুলে নেওয়া হয় অন্তত ১ হাজার কোটি টাকা। পরে মন্ত্রণালয়ের পূর্ণাঙ্গ তদন্তে মেলে ১৬৪৭ কোটি টাকা লোপাটের প্রমাণ।

জানা গেছে, ১৭টি প্রকল্পের মোট স্কিম সংখ্যা ১ হাজার ৮১০টি। ৩৭০টি স্কিমের নথি গায়েব হয়েছে। এসব প্রকল্পে চুক্তিমূল্য থেকে অধিক বিল উত্তোলেন করা হয়েছে, স্কিমের কাজ শতভাগ কাজ শেষ না করে বিল উত্তোলন করা হয়েছে। এক প্রকল্পের সঙ্গে অন্য প্রকল্পের দ্বৈততা রয়েছে (এক প্রকল্প দেখিয়ে দুইবার; তিনবার; চার বার বিভিন্ন প্রকল্পের বিল ‍উত্তোলন করা হয়েছে)। চুক্তিগত ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের পরিবর্তে অন্য ঠিকাদারকে বিল প্রদান করা হয়েছে।

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করে এই প্রকল্পগুলোর অনুমোদন দেন, যার প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি।

তিনি বলেন, পিরোজপুর ১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, পিরোজপুর ২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন মহারাজ, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মেরাজুল ইসলাম, সাবেক নজিরপুর উপজেলা চেয়ারম্যান নুরে আলম শাহীন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব তোফাজ্জেল হোসেন মিয়ার রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক প্রভাবের সম্পৃক্ততার বিষয়টি প্রথমিক তদন্তে উঠে এসেছে। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানগুলোকেও কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। প্রত্যক্ষভাবে জড়িত স্থানীয় সরকার অধিদপ্তরের বিভিন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্তসহ তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা।

ইত্তেফাক/এপি
 
unib