মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২
The Daily Ittefaq

কাপ্তাইয়ে শুকিয়ে গেছে পাহাড়ি ছড়া

আপডেট : ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৫৬

রাঙ্গামাটির কাপ্তাই উপজেলার পার্বত্য জনপদের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাসকারী বিপুলসংখ্যক মানুষ পাহাড়ি ছড়ায় প্রবহমান পানি থেকে গোসল, জামাকাপড় ধোয়াসহ প্রয়োজনীয় দৈনন্দিন কাজ করে থাকেন। কিন্তু পাহাড়ি ছড়াগুলো এখন শুকিয়ে আছে। ছড়ায় পানির প্রবাহ না থাকায় পানীয় জলের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। সাধারণ মানুষের পানির কষ্ট বেড়েছে। অনেকে দূরে কোথাও গিয়ে পানির উৎস্য থেকে দৈনন্দিন পারিবারিক কাজ সারছেন।

সরেজমিন দেখা গেছে, ওয়াগ্‌গাছড়া, পাগলীপাড়া ছড়াসহ বিভিন্ন পাহাড়ি ছড়ায় বর্তমানে পানির প্রবাহ নেই। বর্ষার সময় যেসব ছড়া দিয়ে উপচে পড়ত পানির স্রোত, সেসব ছড়া এখন শুকিয়ে কাঠ হয়ে আছে। কাপ্তাই উপজেলার ৫ নম্বর ওয়াগ্‌গা ইউনিয়ন পরিষদের প্রাক্তন সদস্য আপাই মারমা বলেন, নিম্ন আয়ের মানুষ পাহাড়ি ছড়ার প্রতি বেশি নির্ভরশীল। বর্তমানে ছড়ায় পানি না থাকায় তাদের কষ্ট হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, ছড়ার আশপাশেই সাধারণ মানুষ বসতি গড়ে তুলেছেন। ছড়ার পানি দিয়ে পারিবারিক ও গৃহস্থালি দৈনন্দিন কাজকর্ম করা ছাড়াও অনেকে সেচকাজেও ছড়ার পানি ব্যবহার করে থাকেন। এখন পাহাড়ি ছড়া শুকিয়ে যাওয়ায় সাকসবজি এবং বিভিন্ন ফসলের জমিতে ও সেচ দিতে সমস্যা হচ্ছে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান চিরনজিত তনচংগ্যা বলেন, জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি এবং মার্চ-এ তিন মাস পানির প্রবাহ না থাকায় পাহাড়ি ছড়াগুলো শুকিয়ে যায়। তিনি আরো বলেন, ছড়ায় পানি প্রবাহের মূল উৎস হলো বৃষ্টি এবং পাহাড়ি ঝরনা ধারা। বৃষ্টি না থাকলে ঝরনা ধারায়ও পানি আসে না। তাই ছড়াগুলো শুকিয়ে যায়। তবে এটি প্রাকৃতিক বিষয়। প্রতি বছর এ সময় সাধারণ মানুষকে পানির কষ্ট ভোগ করতে হয়। সচ্ছল ব্যক্তিরা গভীর নলকূপ বসিয়ে পানির প্রয়োজন মেটাতে পারলেও সবার পক্ষে অতিরিক্ত টাকা খরচ করে গভীর নলকূপ বসানো সম্ভব হয় না। তবে বৃষ্টি নামলে পানির এ কষ্ট আর থাকবে না।

কামিলাছড়ি এলাকার বাসিন্দা মঙ্গল চাকমা বলেন, আমাদের পাড়ায় অনেক গভীর নলকূপেও পানি উঠছে না। তিনি বলেন, শুষ্ক মৌসুম হওয়ায় মাটির নিচের পানির স্তর আরো নিচে নেমে গেছে। যে কারণে সব নলকূপে পানি উঠছে না। তবে যে দুই-একটি গভীর নলকূপে পানি উঠছে পাহাড়ের মানুষ সেখান থেকে প্রয়োজনীয় পানি সংগ্রহ করে আনছেন।

রাঙ্গামাটি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সরকারিভাবে পার্বত্য জনপদের বিভিন্ন পাড়ায় এবং জনবসতিপূর্ণ এলাকায় বিপুল পরিমাণ গভীর নলকূপ বসানো হয়েছে। এসব গভীর নলকূপের কোনো কোনোটি থেকে পানি পাওয়া যাচ্ছে। আর এতে অনেকেই উপকৃত হচ্ছেন। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে পার্বত্য জনপদে পানির কষ্ট দূর করতে আরো বেশি সংখ্যক গভীর নলকূপ বসানোর পরিকল্প রয়েছে বলে ও সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়।

ইত্তেফাক/এমএএস