শুক্রবার, ২৮ মার্চ ২০২৫, ১৪ চৈত্র ১৪৩১
The Daily Ittefaq

আওয়ামী লীগের হরতাল নিয়ে ডিএমপি কমিশনার

‘প্রস্তুতি আছে, কিছু ঘটবে না’ 

আপডেট : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০১:১০

আওয়ামী লীগের ডাকা মঙ্গলবারের হরতাল মোকাবেলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়ার কথা জানিয়ে কাউকে আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী।

সংস্কার করা তেজগাঁও উপকমিশনার কার্যালয় উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

আওয়ামী লীগ ফেইসবুকভিত্তিক কর্মসূচি দিচ্ছে, বিষয়টিকে কীভাবে দেখছেন জানতে চাওয়া হলে ডিএমপি কমিশনার বলেন, “এখন মিডিয়ার যুগ, দিতেই পারে।”

এরপরেই তার কাছে মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের ডাকা হরতাল কর্মসূচির ব্যাপারে কোনো প্রস্তুতি আছে কি না জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “অল.. প্রস্তুতি আছে। আমার ডিপার্টমেন্ট থাকবে। কোনো ইয়ে নেই…আপনারা আশঙ্কিত হবেন না। কোনো কিছু করবে না, কোনো কিছু ঘটবে না।”

মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের পদত্যাগসহ ১০ দাবিতে গত ২৮ জানুয়ারি দলের ফেইসবুক পেইজে বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ।

কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ১ থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি আছে প্রচারপত্র বিলি; ৬ ফেব্রুয়ারি প্রতিবাদ মিছিল ও সমাবেশ; ১০ ফেব্রুয়ারি বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ; ১৬ ফেব্রুয়ারি অবরোধ এবং ১৮ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা সর্বাত্মক হরতাল।

১ ফেব্রুয়ারি থেকে প্রচারপত্র বিলির মধ্যে দিয়ে কর্মসূচি শুরুর কথা আওয়ামী লীগ ফেইসবুকে দিচ্ছিল নিয়মিতই। এরপরই গ্রেপ্তার-আটকের মুখে পড়তে থাকেন দলটির নেতাকর্মীরা।

পরের কর্মসূচিগুলোতেও খুব একটা প্রকাশ্যে নামতে দেখা যায়নি তাদের। তবে ফেইসবুকে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে দলটি।

ফেইসবুকে আওয়ামী লীগের হরতাল আহ্বানের বিষয়ে ঢাকার পুলিশ কমিশনার সাজ্জাত আলী বলেন, “এটা তো আপনারা ফেইসবুকে দেখতেছেন, অতীতেও এরকম প্রোগ্রাম দিয়েছে।

“পুরো শহরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আছে, প্রস্তুতি আছে। আমরা কাজ করছি। গত দেড় মাসে এরকম প্রোগ্রাম আরও দিয়েছে। এগুলো আমরা মোকাবিলাও করেছি। ল অ্যান্ড অর্ডার..গুড।”

চলমান অপারেশন ডেভিল হান্ট নিয়ে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, “এই অভিযানে পুলিশের ভূমিকাই মুখ্য। ইতিমধ্যে প্রায় ৫০০ জন গ্রেপ্তার হয়েছে। এটার একটা ভালো ফলাফল আছে।”

দাবি-দাওয়া নিয়ে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের রাস্তায় নেমে যাওয়াওয মানুষের দুর্ভোগ নিয়েও কথা বলেন সাজ্জাত আলী।

পুলিশ কমিশনার বলেন, “আমাদের এখন মূল সমস্যা নানা গোষ্ঠী তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে রাস্তায় নামছে। রাস্তায় নেমে ট্রাফিকটা বন্ধ করে, ফলে মানুষের অনেক সাফারিং হয়।

“একাধিকবার তাদের অনুরোধ করা হয়েছে এই কাজটা না করার জন্য। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেক ভালো। তাদের বলেছি দাবি আদায়ের স্থান রাস্তা হতে পারে না। দাবি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে টেবিলে বসে সমাধান করেন।”

দাবি আদায়ে রাস্তায় বসে ঢাকাবাসীকে কষ্ট দেওয়া খুবই মর্মান্তিক ঘটনা বলে মনে করেন পুলিশ কমিশনার।

কয়েক মাস ধরে আদাবর-মোহাম্মদপুর এলাকায় ছিনতাই বেড়ে যাওয়ার প্রসঙ্গে ডিএমপি কমিশনার বলেন, “এই এলাকায় নতুন নতুন অফিসার দেওয়া হয়েছে। সংখ্যার চেয়েও বেশি দেওয়া হয়েছে। প্রতিদিন ব্লক রেইড দেওয়া হচ্ছে। ইদানিং ছিনতাই অনেক কম।”

“মোহাম্মদপুর, আদাবর, বসিলা, শ্যামলী এসব এলাকায় ছিনতাই এখনো হয়। ক্রাইম ডিভিশনের পাশেও ডিবি এবং র‌্যাবকেও অনুরোধ করেছি এসব এলাকায় টহল জোরদার করার জন্য। আশা করি ছিনতাই অচিরেই বন্ধ হবে।”

গত বছর অগাস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় মোহাম্মদপুর থানাধীন কলেজ গেট এলাকায় পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার কার্যালয়টি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সংস্কার শেষে ছয় মাস পর সোমবার এই কার্যালয়টি আবার চালু হলো।

ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার সাজ্জাত আলী উপকমিশনার থাকার সময় এই কার্যালয়ে বসতেন।

বক্তব্যে সেই সময়ের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, “আমি দুই বছর কাজ করেছি এই অফিসে। তখন ওয়েস্ট ডিভিশন বলা হতো, এখন বলা হয় তেজগাঁও ডিভিশন।”

“এই এলাকায় অনেক বস্তি ছিল, বিএনপি বস্তি ছিল। প্রচুর অপরাধ হতো, শুটিং হতো। কয়েকজন শীর্ষ সন্ত্রাসীর এই এলাকায় বিচরণ ছিল। শাহাদাত ছিল আলাউদ্দিন ছিল, মোহাম্মদপুরে আরো দুজন ছিল। সে সময় কাজ করেছি সেই স্মৃতি ভোলার নয়।”

ইত্তেফাক/এমএএম
 
unib