অভ্যুত্থানের ষড়যন্ত্র ও সন্ত্রাসী সংগঠন গঠনের অভিযোগে রাশিয়ার সাবেক এমপি ইলিয়া পোনোমারেভের বিরুদ্ধে মামলা করেছে ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিস (এফএসবি)। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংস্থাটির পক্ষ থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
পনোমারেভ ২০০৭ সালে এমপি হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করলেও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ২০১৪ সালে রাশিয়া থেকে পালিয়ে যান। এক বছর পরে রাশিয়ার তদন্ত কমিটি পোনোমারেভের বিরুদ্ধে একটি গবেষণা কেন্দ্র থেকে ২২ মিলিয়ন রুবেল চুরির অভিযোগ এনে ফৌজদারি মামলা করে। এরপর তার সংসদীয় ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হয়। তাকে রাখা হয় ওয়ান্টেড তালিকায়।
রাশিয়া ছাড়ার পর থেকে সাবেক এই এমপি রুশ সরকারের কট্টর বিরোধী হয়ে ওঠেন। তিনি 'রুশ প্রতিরোধের' ঘোষণা দেন। এরপর তিনি ইউক্রেনে চলে যান, যেখানে তিনি ২০১৯ সালে নাগরিকত্বও অর্জন করেন।
বারবার রুশ নাগরিকদের কিয়েভের বাহিনীতে যোগ দিতে এবং সহিংসভাবে রাশিয়ায় ক্ষমতা দখলের আহ্বান জানিয়ে আসছেন তিনি। গত বছর এফএসবি সাবেক এই এমপির বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদ ও রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে ফৌজদারি মামলা করে।
এফএসবি জানিয়েছে, পোল্যান্ডভিত্তিক গ্রুপ কংগ্রেস অব পিপলস ডেপুটিসের (সিপিডি) সঙ্গে সম্পর্কের কারণে পোনোমারেভের বিরুদ্ধে নতুন মামলা করা হয়েছে। সাবেক এই আইনপ্রণেতা ২০২২ সালে প্রতিষ্ঠিত এই দলটিকে 'নির্বাসনে থাকা রাশিয়ার নতুন সরকার' হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি তার সংগঠনকে রাশিয়ার 'প্রোটো-পার্লামেন্ট' বলে অভিহিত করেছেন।
এফএসবি জানিয়েছে, সাবেক এই এমপি সিপিডি দল প্রতিষ্ঠার পর থেকে ৬০ জনেরও বেশি প্রাক্তন রাশিয়ান রাজনীতিবিদ সেখানে যুক্ত হয়েছেন। 'নতুন রাশিয়ার সংবিধানের' পাশাপাশি 'অন দ্য ট্রানজিশনাল পার্লামেন্ট' এবং 'অন দ্য রেজিস্ট্যান্স মুভমেন্ট'-এর মতো ৩০টিরও বেশি আদর্শিক আইন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এগুলো রাশিয়ার আইন অনুসারে অবৈধ।
এফএসবির অভিযোগ, পোনোমারেভের দলের পরিকল্পনা হলো বলপ্রয়োগের মাধ্যমে রাশিয়ার ক্ষমতা দখল করা। এ লক্ষ্যে সাবেক এই আইনপ্রণেতা কিয়েভের একটি আধাসামরিক বাহিনীর সঙ্গে সহযোগিতা নিয়ে কাজও করছেন, যাদের রাশিয়ায় সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
এফএসবি পোনোমারেভের বিরুদ্ধে 'সহিংস ক্ষমতা দখল বা ক্ষমতার সহিংস ধরে রাখা' এবং 'একটি সন্ত্রাসী সম্প্রদায়ের সংগঠন এবং এতে অংশগ্রহণ' - দুটি অভিযোগে একটি ফৌজদারি মামলা শুরু করে। দোষী সাব্যস্ত হলে তার ২০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।
সাবেক এই আইনপ্রণেতা 'পুতিনকে কি মরতে হবে?' শিরোনামে একটি বই লিখেছেন। যেখানে তিনি নিজেকে রাশিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন নেতার প্রার্থী হিসেবে তুলে ধরেছেন। এফএসবির তথ্য অনুসারে, ব্যক্তিগতভাবে এই নেতা 'পুতিনকে পৃথিবী থেকে নির্মূল করার' পরিকল্পনা করেছিলেন।