শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ৫ বৈশাখ ১৪৩২
The Daily Ittefaq

স্লিপ সংকটে বিপাকে আলু চাষিরা, ব্যবসায়ি ও মজুদদারের দখলে হিমাগার

আপডেট : ০৬ মার্চ ২০২৫, ১২:৪৩

দিনাজপুরের কাহারোলে ২টি হিমাগার রয়েছে। স্লিপ সংকটে পড়েছেন উপজেলার আলু চাষিরা। জমি থেকে আলু তোলার সময় হিমাগারে স্লিপ পাচ্ছে না আলু চাষিরা। বাজারে আলুর দরপতন ঠেকাতেও এবং আগামী মৌসুমের জন্য বীজ আলু সংরক্ষণ করতে চাইলে মজুদদার ও ব্যবসায়িদের দৌরাত্মে প্রকৃত কৃষকে আলুর স্লিপ থেকে বঞ্চিত করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

উপজেলার হাটিয়ারি গ্রামের কৃষক উজ্জ্বল জানান, এবার তিনি ১ একর জমিতে আলু চাষ করেছেন কিন্তু হিমাগারে আলু রাখার জন্য ১০০ বস্তা সিøপ চেয়েছিলেন এজেন্টের নিকট কিন্তু ৩০ বস্তার স্লিপ দিয়েছেন। 

একই গ্রামের কৃষক সুকুমার বলেন, স্লিপের জন্য অনেকবার চেষ্টা করেছি ২০টি বস্তা সিøপ পেয়েছি কবে হিমাগারে আলু দিতে পারব তা এখনও হিমাগার কর্তৃপক্ষ জানাননি। আলুর স্লিপ না পাওয়ার কারণে বাধ্য হয়ে কম দামে আলু চাষিরা তাদের আলু বিক্রি করছে। কৃষকরা বলছেন, স্লিপ না পাওয়ার কারণে কম দামে আলু বিক্রি করে লোকসান হচ্ছে।

কাহারোল উপজেলায় ২টি হিমাগার রয়েছে। একটি রয়েছে বটতলা রামপুরে তার ধারণ ক্ষমতা ১ লক্ষ ৫০ হাজার বস্তা। গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত শাহী হিমাগারে আলু সংরক্ষণ করা হয়েছে ৩৫ হাজার বস্তা। অপরদিকে ১০ মাইল পূর্ব সাদীপুর এলাকায় অবস্থিত রাহবার এর ম্যানেজার জানান, তাদের হিমাগারের ধারণ ক্ষমতা ২ লক্ষ ৫০ হাজার বস্তা। গতকাল পর্যন্ত আলু সংরক্ষণ করা হয়েছে ৩৫ হাজার বস্তা।

কাহারোল উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ৪ হাজার ৪০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ করা হয়েছে। উৎপাদন হবে বলে আশা করছেন কৃষি বিভাগ ১ লক্ষ ১০ হাজার মেট্রিক টন। কৃষি বিভাগ জানায়, রাহবার হিমাগারে ১৩ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতা ও শাহী হিমাগারে ধারণ ক্ষমতা ১০ হাজার ৫০০ শত মেট্রিক টন। উৎপাদনের ২৫ থেকে ২৬ ভাগ আলু রাখা যাবে ২টি হিমাগারে জানিয়েছেন হিমাগার কর্তৃপক্ষ। চাষিদের অভিযোগ ব্যবসায়ীদের কারণে আলু চাষিরা হিমাগারে আলু দিতে পারছে না।

কাহারোল উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মল্লিকা রানী সেহানবীশ বলেন, আলু সংরক্ষণের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকলে কৃষকেরা ভবিষ্যতে আলুর আবাদ কমিয়ে দিবেন। বিশেষ করে বীজ আলু সংরক্ষণের ব্যবস্থা দ্রুত না নিলে আগামী মৌসুমে আলুর উৎপাদন কমে যেতে পারে।

কাহারোল উপজেলা নির্বাহী অফিসরা মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, যদি কোন হিমাগার স্লিপ বিতরণে অনিয়ম করে থাকে, ব্যবসায়ী বা মজুদদারদের সুবিধা দিয়ে কৃষকদের বঞ্চিত করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইত্তেফাক/এএইচপি