মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২
The Daily Ittefaq

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক  

আপডেট : ১৭ মার্চ ২০২৫, ১৩:০৩

দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে পুলিশের ১২৭ জন শীর্ষ কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সোমবার (১৭ মার্চ) সকাল সোয়া ১১টায় রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এ বৈঠক শুরু হয়। এতে সভাপতিত্ব করছেন তিনি নিজেই।  

এর আগে রোববার (১৬ মার্চ) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেসসচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানান, দেশের সাম্প্রতিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ রয়েছে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সোমবার মাঠপর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন প্রধান উপদেষ্টা।  
 
এ বৈঠকে দেশের সব জেলার পুলিশ সুপার (এসপি), রেঞ্জ ডিআইজি, মহানগর পুলিশ কমিশনার, বিভিন্ন ইউনিট প্রধান, পুলিশ সদর দপ্তরের তিনজন ডিআইজি, সব অতিরিক্ত আইজিপি এবং আইজিপিরা অংশ নিচ্ছেন। বৈঠকে বর্তমান নিরাপত্তা পরিস্থিতি ও করণীয় বিষয়ে আলোচনা করা হবে।  
 
পুলিশের একটি অংশ স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠনের দাবি তুলতে পারে বলে জানা গেছে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পুলিশের ভূমিকা এবং নিরপেক্ষতা বজায় রাখার জন্য এই দাবি দীর্ঘদিন ধরে আলোচিত। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর পুলিশ বাহিনীর রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হচ্ছে।  

গত ৩ অক্টোবর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পুলিশ সংস্কার কমিশন গঠন করে। এরপর ১৫ জানুয়ারি কমিশন তাদের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দেয়। প্রতিবেদনে পুলিশকে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ রাখতে একটি পৃথক 'পুলিশ কমিশন' গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়।  

সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রস্তাবিত পুলিশ কমিশন আইনের আওতায় সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হবে, নাকি সাংবিধানিক কাঠামোর অংশ হবে—সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞ মতামত নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। এ কমিশনের সদস্যদের মধ্যে একজন আইনজ্ঞ, একজন অবসরপ্রাপ্ত আইজিপি, একজন সমাজবিজ্ঞানী বা পুলিশিং বিশেষজ্ঞ এবং একজন মানবাধিকারকর্মী থাকার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।  
 
তবে পুলিশ সদস্যদের একটি বড় অংশ এই প্রতিবেদনের কয়েকটি সুপারিশ নিয়ে আপত্তি তুলেছেন। তাদের মতে, সংস্কার কমিশন পুলিশের অভ্যন্তরীণ বাস্তবতা বিবেচনা না করেই সুপারিশ করেছে।  

পুলিশ সদর দপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, বিচার-বিশ্লেষণের নামে সংস্কার প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত করার চেষ্টা হচ্ছে। এ ছাড়া সংস্কার কমিশনের সুপারিশে 'বিশেষজ্ঞ মতামত' নেওয়ার কথা থাকলেও পুলিশের অভ্যন্তরীণ বিশেষজ্ঞদের যথাযথভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।  

এ বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা পুলিশের দায়িত্বশীল ভূমিকা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় করণীয় বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেবেন। পুলিশ সদর দপ্তরের মুখপাত্র এআইজি ইনামুল হক সাগর বলেন, প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য পুলিশের সদস্যদের অনুপ্রাণিত করবে এবং বাহিনীর ভেতর ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে। 

ইত্তেফাক/টিএইচ