বাংলাদেশ এয়ারপোর্ট সিকিউরিটি ফোর্স গঠনের প্রস্তাব বাতিল ও বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) এভিয়েশন সিকিউরিটি বিভাগের স্বার্থ সংরক্ষণের দাবিতে বেবিচকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।
সোমবার (১৭ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সিভিল অ্যাভিয়েশন হেডকোয়ার্টারের প্রাঙ্গণে এই বিক্ষোভ কর্মসূচি ও প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে। ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কের এক অংশ বন্ধ রাখলে রাস্তায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
সভায় সিভিল অ্যাভিয়েশন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলেন, বাংলাদেশ এয়ারপোর্ট সিকিউরিটি ফোর্স (বিএএসএফ) গঠনের প্রস্তাব প্রণয়ন ও উত্থাপনের মাধ্যমে আমাদের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের আওতাধীন এভিয়েশন সিকিউরিটি(এভসেক) বিভাগ অত্যন্ত দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে দেশের সকল বিমানবন্দরের নিরাপত্তার নিশ্চিত করে আসছে। বিদ্যমান এবং কার্যকর এভসেক কাঠামো থাকা সত্ত্বেও নতুন নিরাপত্তা ফোর্স গঠনের কোন যৌক্তিকতা নেই। এটি এভসেক বিভাগের অস্তিত্বকে সংকটের মুখে ঠেলে দেবে এবং বেসামরিক বিমান চলাচল খাতের সার্বিক সুশাসন ও কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ এর চেয়ারম্যান বরাবর ৬ দফা দাবিসমূহ বাস্তবায়নে স্বারকলিপি প্রদান করেন।
দফাগুলো হচ্ছে- এভসেক বিভাগকে অকার্যকর করার সব ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে হবে; বেবিচকের অর্গানোগ্রাম পূর্ণভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে; প্রতিষ্ঠানটির কাঠামোগত শক্তিশালীকরণ নিশ্চিত করতে হবে; বেবিচকের অধীনে বাংলাদেশ এয়ারপোর্ট সিকিউরিটি ফোর্স গঠনের সিদ্ধান্ত অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে; ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার অ্যাক্টের আওতায় সব জনবল প্রত্যাহার করতে হবে; ১০ সদস্যের পরিচালনা পর্ষদের বিদ্যমান বৈষম্য দূর করতে হবে; বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের স্বনির্ভরতা ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ নিতে হবে।
বেবিচক যা বলছে
এদিকে কর্মচারীদের বিক্ষোভের বিষয়বস্তুর নিয়ে সোমবার দুপুরে স্পষ্ট বক্তব্য দিয়েছে বেবিচক।
এক বিজ্ঞপ্তিতে বেবিচক জানায়, সম্প্রতি বিমানবন্দরের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে একটি নতুন বাহিনী গঠনের গুজব ছড়ানো হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। এ ধরনের কোনো প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়নি এবং বোর্ডের অনুমোদন ছাড়া এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ নেই।
বেবিচক জানায়, কিছু স্বার্থান্বেষী মহল বিমানবন্দর নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে ঘিরে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে অস্থিতিশীলতা তৈরি করার চেষ্টা করছে। কর্তৃপক্ষের মতে, এভিয়েশন খাতের উন্নয়ন ও যাত্রীসেবা নিশ্চিত করতে যে কোনো সিদ্ধান্ত পেশাদারিত্বের সঙ্গে যাচাই-বাছাই করেই নেওয়া হয়।
প্রতিষ্ঠানটি জানায়, তারা জাতীয় উন্নয়নে অবদান রাখতে বদ্ধপরিকর এবং এভিয়েশন খাতের বিকাশে সব বাধা উপেক্ষা করে নিরলসভাবে কাজ করে যাবে।
বেবিচক আরও জানায়, বিমানবন্দরের যাত্রীসেবার সার্বিক মান উন্নয়ন এবং মুনাফা অর্জনের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক প্রমিত প্রবিধানমালা প্রতিপালনের মাধ্যমে ক্রমবর্ধমান এভিয়েশন শিল্পের সার্বিক বিকাশ নিশ্চিত করতে বিমানবন্দরসমূহের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের এভিয়েশন সিকিউরিটি বিভাগ, এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন, অঙ্গীভূত সাধারণ আনসার সদস্যসহ বিভিন্ন সংস্থা কর্তৃক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। তৃতীয় টার্মিনাল পরিচালনার জন্য নিরাপত্তা বিভাগ (এভসেক) এর ৩৪৯২ জনসহ সর্বমোট ৫১১২ জন নিয়োগের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।