বৈষম্যের শিকার হয়েছেন পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) ১৪ হাজার মিটার রিডার কাম ম্যাসেঞ্জার। ৩৬ বছর যাবৎ চুক্তি ভিত্তিক কর্মরত মিটার রিডার কাম ম্যাসেঞ্জারদের নিয়মিত করার কোন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
ঢাকা অঞ্চলের একজন নাম প্রকাশ না শর্তে জানান, তিনি ২০ বছর ধরে মিটার রিডার কাম ম্যাসেঞ্জার হিসেবে কর্মরত হলেও তাকে নিয়মিত করা হয়নি। শুধু তিনি নন ৩৬ বছর ধরে চুক্তিভিত্তিক কাজ করার পরেও এই পদের জনবল নিয়মিত করা হয়নি। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির (পবিস) সূচনালগ্ন থেকে ৪৭ বছর ধরেই সাংগঠনিক কাঠামোতে মিটার রিডার কাম-ম্যাসেঞ্জার পদটি রয়েছে।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, অজ্ঞাত কারণে তাদের নিয়মিত করা হচ্ছে না। পল্লী বিদ্যুৎ এর ভৌগিলিক কারণে তাদের পাহাড়, হাওড় ও চর এলাকায় কাজ করতে হয়। এতে তাদের পরিশ্রমও অনেক বেশী হয়। পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহক সংখ্যা ৩ কোটি ৭০ লাখ। প্রতি মাসে গ্রাহক বাড়ছে এক থেকে দেড় লাখ। গ্রাহক অনুপাতে সারা দেশে প্রায় ১৮ হাজার মিটার রিডার কাম ম্যাসেঞ্জার থাকার কথা। সেখানে আছে প্রায় ১৪ হাজার। ৪ হাজার জনের বাড়তি কাজ করতে হচ্ছে তাদের।
তারা বলছেন, বকেয়া বিদ্যুৎ বিল আদায়, অবৈধ বিদ্যুৎ ব্যবহারকারীকে শনাক্তকরণ, নাইট ও ডে অপারেশন, মিটার চেকিং, গ্রাহক মোটিভেশান, দাপ্তরিক চিঠি পত্র ও বিজ্ঞপ্তি বিতরণ, অফিস ডিউটি এবং দুর্যোগ মুহূর্তে লাইন সচল করার কাজসহ পল্লী বিদ্যুতের নানা ধরণের কাজ করতে হয় তাদের। অথচ তাদেরই নিয়মিত করা হয়নি। আগামী ১০ থেকে ১৫ বছরের মধ্যে ১০ হাজার জনবল বয়সজনিত কারণে অবসরে যাবেন। বিদায় মিটার রিডার কাম ম্যাসেঞ্জার নিয়মিত করলেও প্রিপেইড মিটার স্থাপন কোন ভাবেই বাধাগ্রস্ত হবে না।
তাদের বক্তব্য, এক সময় পল্লী বিদ্যুতে সিস্টেম লস ছিল শতকরা ৩০ ভাগ। বকেয়া ছিল ৪ মাস। বর্তমানে মিটার রিডার কাম ম্যাসেঞ্জারদের তৎপরতার কারণে সিস্টেম লস সিঙ্গেল ডিজিটে নেমে এসেছে। আর বকেয়া রয়েছে মাত্র ১ মাসের।
অন্যদিকে পবিসের সাংগঠনিক কাঠামোর ২৮ টি পদের মধ্যে মিটার রিডার কাম ম্যাসেঞ্জার ছাড়া বাকি ২৭ টি পদের জনবল নিয়মিত।
এসব বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের একাধিক শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তা জানান, অন্যান্য পদে কর্মরতদের নিয়মিত করার কারণে স্বাভাবিক কারণেই মিটার রিডার কাম ম্যাজেঞ্জার মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে। তাই তাদেরকেও নিয়মিত করা উচিত। তারা বলেন সদ্য যাদের নিয়মিত করা হয়েছে তাদের জন্য পবিসের ব্যয় বৃদ্ধি পেলেও মিটার রিডার কাম ম্যাসেঞ্জার নিয়মিত করলে পবিসের উল্লেখযোগ্য কোন ব্যায় বৃদ্ধি পাবে না। তাই বিষয়টি সরকারের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করছে।