ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগলুকে দুর্নীতির অভিযোগে বিচারের জন্য কারাগারে পাঠানো হয়েছে। রোববার (২৩ মার্চ) তুরস্কের একটি আদালত এই আদেশ দেন।
রয়টার্সের প্রতিবেদন বলছে, প্রধান বিরোধী দল, ইউরোপীয় নেতারা এবং লাখ লাখ বিক্ষোভকারী যখন এরদোয়ানের পদক্ষেপকে রাজনৈতিক ও অগণতান্ত্রিক বলে সমালোচনা করছিলেন, তখনই প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী ইমামোগলুকে কারাগারে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো।
রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এবং অন্যান্য সম্প্রচারকরা জানিয়েছে, এই পদক্ষেপ প্রেসিডেন্ট তাইয়্যেপ এরদোয়ানের সরকারের বিরুদ্ধে এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে দেশের সবচেয়ে বড় বিক্ষোভকে উস্কে দিতে পারে।
আদালত জানিয়েছে, ৫৪ বছর বয়সী ইমামোগলু এবং কমপক্ষে ২০ জনকে দুর্নীতির তদন্তের অংশ হিসেবে কারাগারে পাঠানো।
তার বিরুদ্ধে 'একটি সন্ত্রাসী সংগঠনকে (পিকেকে) সহায়তা এবং মদদ দেওয়ার' মতো অভিযোগ আনা হয়েছে। সেই সঙ্গে ঘুষ, চাঁদাবাজি, দুর্নীতি, ব্যাপক জালিয়াতি এবং একটি অপরাধমূলক সংগঠনের অংশ হিসেবে অবৈধভাবে ব্যক্তিগত স্বার্থ অর্জনের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। এসব মামলায় তার সঙ্গে আরও অনেকেই আসামি করা হয়েছে।
আইনি জটিলতার ক্রমবর্ধমান ঝামেলার মধ্যে ইমামোগলু গত বছর ব্যাপকভাবে ভোট পেয়ে মেয়র হিসেবে পুনর্নির্বাচিত হন। ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য প্রজাতন্ত্রী জনতা দল (সিএইচপি) থেকে মেয়র ইমামোগলুকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করার কয়েকদিন আগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এতকিছুর মধ্যেও আজ রোববার এরদোয়ানের ক্ষমতাসীন জোটের প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টি এবং অন্যরা পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য ইমামোগলুকে প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত করার জন্য ভোট দিচ্ছেন।
আঙ্কারার মেয়র মনসুর ইয়াভাস আজ সাংবাদিকদের বলেন, ইমামোগলুকে কারাদণ্ড দেওয়া বিচার ব্যবস্থার জন্য লজ্জাজনক।
তবে সরকার বলছে, তদন্ত রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নয় এবং আদালত স্বাধীন। তারা দেশব্যাপী বিক্ষোভের বিরুদ্ধে সতর্ক করেছে, বিশেষ করে রাস্তায় সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরও চার দিনের জন্য বাড়ানো হয়েছে।
গতকাল শনিবার ইস্তাম্বুল পৌরসভা ভবন এবং প্রধান আদালতের বাইরে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হয়। উভয় স্থানেই শত শত পুলিশ মোতায়েন ছিল। তারা বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করার জন্য জলকামান, কাঁদানে গ্যাস এবং রাবার বুলেট ব্যবহার করে। জনতাও পুলিশের দিকে আতশবাজি এবং অন্যান্য জিনিসপত্র নিক্ষেপ করে।
বেশিরভাগ বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণ থাকলেও পশ্চিম উপকূলীয় প্রদেশ ইজমির এবং রাজধানী আঙ্কারায় টানা তৃতীয় রাতেও বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে।
মিডিয়া রিপোর্টে বলা হয়েছে, পুলিশ রাতারাতি বেশ কয়েকটি বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে। রোববার ভোরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলী ইয়েরলিকায়া জানিয়েছেন, বিক্ষোভ চলাকালীন তুর্কি কর্তৃপক্ষ ৩২৩ জনকে আটক করেছে, যেখানে ৯৭ জনকে আটকের কথা জানিয়েছিলেন তিনি।