রাজধানীর তুরাগ থানাধীন উত্তরা ১৬ নম্বর সেক্টর থেকে আহসান উল্লাহ (৪৮) নামে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মহাব্যবস্থাপকের (জিএম) লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) বেলা ১২টার দিকে মরদেহ উদ্ধারের পর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে, আহসান উল্লাহ হাসান হা-মীম গ্রুপের আশুলিয়ার দ্যাটস ইট স্পোর্টস ওয়্যার লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক (ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ার) হিসাবে কর্মরত ছিলেন। তার বাসা তুরাগ থানাধীন চন্ডালভোগ এলাকায়। বাসা থেকে নিজস্ব প্রাইভেটকারে অফিসে যাতায়াত করতেন। প্রতিদিনের মত গত রবিবার সকালে কোম্পানির কাজের উদ্দেশে বাসা থেকে গাড়ি নিয়ে বের হন। গাড়ি চালাচ্ছিলেন তার ব্যক্তিগত চালক সাইফুল ইসলাম। সাইফুল আট মাস ধরে এই গাড়ি চালান। অফিসের কাজ শেষে সাড়ে তিনটায় তিনি প্রাইভেটকারে বাসার উদ্দেশে রওনা হন। ৪টায় তার স্ত্রী লুৎফুন নাহার তাকে ফোন করলে অপরপ্রান্ত থেকে কল কেটে দেওয়া হয়। পরে ইফতারের আগে লুৎফুন নাহার পুনরায় ফোন করেও স্বামীকে পাননি। এরপর স্বামীর খোঁজ নেওয়ার জন্য চালক সাইফুলকে ফোন করেন তিনি। সাইফুল তাকে জানান, আহসান উল্লাহকে নিয়ে মিরপুরে অবস্থান করছেন। তার কাছে ফোন দিতে বললে, চালক বলেন- ‘স্যার মিটিং করছে।’ রাত ৮টায়ও বাসায় না ফেরায় আবার স্বামীকে ফোন করেন লুৎফুন নাহার। তখন ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর স্বামীর খোঁজে চালক সাইফুলকে ফোন করলে চালক জানান, আহসান উত্তরা ১৭ নম্বর সেক্টরে একজনের সঙ্গে দেখা করতে গেছেন। তাকে গাড়ি নিয়ে বাসায় চলে যেতে বলেছেন। রাতে তিনি বাসায় গাড়ি রেখে চলে যান।
বিভিন্ন স্থানে আহসানের সন্ধান শুরু করেন স্বজনরা। কিন্তু কোথাও না পেয়ে ভোরে তুরাগ থানায় সাধারণ ডায়েরী (জিডি) করা হয় পরিবারের পক্ষ থেকে। সোমবার সকালেই চালক সাইফুল চন্ডালভোগ এলাকার ভাড়া বাসা থেকে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে আত্মগোপনে চলে যান। তার ফোন নম্বরও বন্ধ। সোমবার সাইফুলকে আসামি করে আহসানের স্ত্রী লুৎফুন নাহার বাদি হয়ে অপহরণ মামলা করেন।
তুরাগ থানার ওসি রাহাত খান বলেন, জিডি হওয়ার পর থেকেই নিখোঁজ ব্যক্তির সন্ধান চালানো হয়। মঙ্গলবার বেলা ১২টায় খবর পাওয়া যায়, ১৬ নম্বর সেক্টরের কাশবনের ভেতরে অজ্ঞাত একজনের লাশ পড়ে আছে। অর্ধগলিত মৃতদেহ উদ্ধারের পর জানা যায়, এই ব্যক্তিই নিখোঁজ থাকা আহসান উল্লাহ। শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, শ্বাসরোধে হত্যার পর লাশ সেখানে ফেলে রাখা হয়েছে। অপহরণ মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত করা হবে।