ট্রাম্প প্রশাসনের আমেরিকা ফার্স্ট নীতির কারণে সৃষ্ট ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতার মুখে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করার আহ্বান জানিয়েছেন ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জিন-নোয়েল ব্যারোট। ইউক্রেন যুদ্ধ এবং ইউরোপের সঙ্গে বেইজিংয়ের বাণিজ্য বিরোধ নিয়ে আলোচনার জন্য চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইয়ের সঙ্গে দেখা করে এ আহ্বান জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) সকালে বেইজিং ভাষা ও সংস্কৃতি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে দেওয়া ভাষণে ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে ভূ-রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, সমৃদ্ধি এবং আমাদের গ্রহের ভবিষ্যতের সেবায় একটি শক্তিশালী 'ফ্রাঙ্কো-চীনা অংশীদারিত্ব' আগের চেয়েও বেশি প্রয়োজন।
প্যারিস এবং বেইজিংয়ের মধ্যে এই আলোচনা এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হলো, যখন ইউক্রেনের প্রতি সমর্থন, নিরাপত্তা এবং বাণিজ্যসহ একাধিক বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে উত্তেজনা তীব্রতর হচ্ছে।
প্যারিস আশা করছে, আলোচনায় ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ এবং চীন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে বাণিজ্য উত্তেজনার সমাধানের উপর আলোকপাত করা হবে।
ইউক্রেনে তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধের অবসান ঘটানোর প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে যোগাযোগের সিদ্ধান্ত নেন। তিনি ঘোষণা করেন, ওয়াশিংটন ইউরোপের নিরাপত্তার দায়িত্ব নেবে না।
বৃহস্পতিবার তিনি গাড়ির ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন, ইউরোপীয় গাড়ি নির্মাতাদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
ইউরোপীয় কমিশনের সভাপতি উরসুলা ভন ডের লেইন বলেছেন, এই শুল্ক ব্যবসায়ীদের জন্য খারাপ এবং ভোক্তাদের জন্য আরও খারাপ হবে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন চীনা বৈদ্যুতিক যানবাহনের ওপর শুল্ক আরোপের পক্ষে ভোট দেওয়ার কয়েকদিন পর, অক্টোবরে চীন ইউরোপীয় ব্র্যান্ডি আমদানির ওপর ৩০.৬ শতাংশ থেকে ৩৯ শতাংশ পর্যন্ত অস্থায়ী শুল্ক আরোপ করে। এই পদক্ষেপের ফলে ফরাসি কগনাক ব্র্যান্ডগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গত বছর তাদের রপ্তানি মূল্য প্রায় এক-চতুর্থাংশ কমে আসে।
বৃহস্পতিবার বেইজিংয়ের সুসজ্জিত দিয়াওয়ুতাই গেস্টহাউসে শীর্ষ চীনা কূটনীতিক ওয়াংয়ের সঙ্গে দেখা করার পর ফরাসি মন্ত্রী বলেন, ফ্রান্স যে কোনো ধরণের বাণিজ্যযুদ্ধের বিরোধিতা করে এবং বাণিজ্য বিষয়গুলোতে, বিশেষ করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং চীনের মধ্যে সংলাপের পক্ষে।