মিয়ানমারের কয়েক দশকের সবচেয়ে মারাত্মক ভূমিকম্পে প্রায় ৭০০ জন মুসলিম নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় মুসলিম সংগঠনগুলো। সেই সঙ্গে শুধু সাগাইং ও মান্দালয় অঞ্চলেই প্রায় ৬০টি মসজিদ ধ্বংস হয়ে গেছে।
ভূমিকম্পের পর যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় অনেক এলাকার সঙ্গে এখনো পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। তাই মৃতদের প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেশি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
গত শুক্রবার আজানের সঙ্গে সঙ্গে শত শত মুসলিম মধ্য মায়ানমারের বিভিন্ন মসজিদে ছুটে যান। পবিত্র মাসের সমাপ্তি উপলক্ষে ঈদের রমজানের শেষ জুমার নামাজ আদায় করতে তারা উদগ্রীব ছিলেন। তারপর স্থানীয় সময় ১টার দিকে একটি মারাত্মক ভূমিকম্প আঘাত হানে।
বিবিসির লাইভ প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ভূমিকম্পে সাগাইং অঞ্চলে তিনটি মসজিদ ধসে পড়ে, যার মধ্যে সবচেয়ে বড় মসজিদটি ছিল মায়োমা শহরে। এই মসজিদের ভেতরে থাকা প্রায় সকলেই মারা যায়।
শত শত কিলোমিটার দূরে থাইল্যান্ড সীমান্তবর্তী এই শহরের মসজিদটির প্রাক্তন ইমাম সোয়ে নেই ওও অন্য সবার মতো এই ভূমিকম্প অনুভব করেন।
বিবিসি জানায়, পরের দিন এই ইমাম জানতে পারেন, তার প্রায় ১৭০ জন আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব এবং তার প্রাক্তন জামাতের সদস্য মারা গেছেন। তাদের বেশিরভাগই মসজিদে ছিলেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ শহরের ঘনিষ্ঠ মুসলিম সম্প্রদায়ের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন।
মুসলিম সংগঠনগুলো অভিযোগ করেছে, নির্মাণের পর থেকেই সরকারের পক্ষ থেকে মসজিদগুলো মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের অনুমতি দেওয়া হয়নি।
মুসলিমবিরোধী 'অ্যাসোসিয়েশন ফর প্রোটেকশন অফ রেস অ্যান্ড রিলিজিয়ন' নামের একটি সামরিক-সমর্থিত অতি-জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠী বৌদ্ধ-সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটিতে মসজিদের বিরুদ্ধে জনমতকে প্রভাবিত করে।
২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর সতর্ক করেছিল, নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করতে না দেওয়ায় মিয়ানমারের ঐতিহাসিক মসজিদগুলোর অবস্থা আরও খারাপ হয়ে গেছে।