মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২
The Daily Ittefaq

নাৎসিদের পর প্রথমবার রাশিয়ার দোরগোড়ায় সেনা মোতায়েন করল জার্মানি

আপডেট : ০২ এপ্রিল ২০২৫, ১৮:১৯

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসিদের পতনের পর বিদেশের মাটিতে প্রথমবারের মতো স্থায়ীভাবে সেনা মোতায়েন শুরু করেছে জার্মানি। দেশটি রুশ মিত্র বেলারুশের কাছে লিথুয়ানিয়ায় তাদের ৪৫তম আর্মার্ড ব্রিগেড মোতায়েন করছে।

ইউক্রেন ইস্যুতে মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ার পর থেকে জার্মান সরকার বলে আসছে, তাদের যুদ্ধের প্রস্তুতির জন্য নিজেদের প্রতিরোধ সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে। কেননা, বার্লিন আগামী বছরগুলোতে মস্কোর সঙ্গে জার্মানি তথা ইউরোপের একাংশের সম্ভাব্য সংঘাতের আশঙ্কা করছে।

জার্মান সংবাদমাধ্যমগুলোর বরাতে রুশ সংবাদমাধ্যম আরটি বলছে, মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) লিথুয়ানিয়ার রাজধানী ভিলনিয়াসের বাইরে একটি অনুষ্ঠানে নবপ্রতিষ্ঠিত ৪৫তম আর্মার্ড ব্রিগেডের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ক্রিস্টোফ হুবার।

লিথুয়ানিয়ায় জার্মানির নবপ্রতিষ্ঠিত ৪৫তম আর্মার্ড ব্রিগেডের সেনারা। ছবি: সংগৃহীত

অনুষ্ঠানে এই ব্রিগেডিয়ার জেনারেল বলেন, আমাদের একটি স্পষ্ট লক্ষ্য রয়েছে। ন্যাটোর পূর্ব প্রান্তে আমাদের লিথুয়ানিয়ান মিত্রদের সুরক্ষা, স্বাধীনতা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

জার্মান সেনাবাহিনীর পরিকল্পনা অনুসারে, ২০২৭ সালের মধ্যে সম্পূর্ণরূপে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হয়ে গেলে এই ব্রিগেডে প্রায় ৫০০০ সামরিক ও বেসামরিক কর্মী থাকবে। এরা ভারী অস্ত্র দিয়ে সজ্জিত থাকবে।

রাশিয়া ন্যাটোকে একটি 'শত্রুভাবাপন্ন সত্তা' হিসেবে দেখে। ইউরোপে ন্যাটোর সম্প্রসারণকে রাশিয়ার জাতীয় নিরাপত্তার জন্য সরাসরি হুমকি হিসেবে বর্ণনা করা হয়। ইউক্রেনকে জোটের সদস্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া নিয়ে ন্যাটোর প্রতিশ্রুতি এবং দেশটির সঙ্গে ক্রমবর্ধমান সম্পৃক্ততাকে রুশ কর্মকর্তারা কিয়েভ যুদ্ধের একটি কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

লিথুয়ানিয়ায় জার্মানির নবপ্রতিষ্ঠিত ৪৫তম আর্মার্ড ব্রিগেডের স্থাপনাগুলো। ছবি: সংগৃহীত

জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টোরিয়াস লিথুয়ানিয়ায় সেনা মোতায়েনের একজন কট্টর সমর্থক। তিনি দাবি করেছেন, রাশিয়া ২০২৯ বা ২০৩০ সালের মধ্যে ন্যাটোর ওপর আক্রমণ শুরু করতে পারে।

২০২৩ সালে জার্মানি এবং লিথুনিয়া একটি অবস্থান চুক্তি সই করে। এর অধীনে প্রাথমিকভাবে জার্মানির নতুন সরকার ৪২তম ব্রিগেড নবপ্রতিষ্ঠিত করলো। এই ব্রিগেডের দুটি ব্যাটালিয়নে জার্মান সেনারা থাকবে এবং তৃতীয়টিতে অন্যান্য ন্যাটো দেশগুলোর সেনারা থাকবে।

ব্রিগেডের কিছু অংশ বেলারুশ সীমান্ত থেকে মাত্র ২০ কিলোমিটার (১২ মাইল) দূরে দক্ষিণ-পূর্ব লিথুয়ানিয়ার রুডনিংকাই প্রশিক্ষণ স্থলে মোতায়েন করা হবে। অতিরিক্ত ইউনিটগুলো ভিলনিয়াস এবং কাউনাসের মধ্যে রুকলা এলাকার কাছে মোতায়েন করা হবে।

প্রসঙ্গত, নাৎসি-পরবর্তী জার্মানি এর আগে কেবল অস্থায়ীভাবে বিদেশে সেনা মোতায়েন সীমাবদ্ধ রেখেছিল। যেমন ২০০১ সালে আফগানিস্তান দখলের পর ন্যাটো বাহিনীতে অবদান রাখা।

ইত্তেফাক/এসকে