‘যুবদলের মদ খাওয়ার কথা লিখছেন? তোর হাড্ডি ভেঙ্গে দেব। ২০১৩ সালের কথা মনে নাই? তোর কোন বাপ আছে দেখিয়ে দেব। আওয়ামী লীগের সময় পাড় পেয়ে গেছোস। তোর কিছুই হয় নাই। এখন কথা কম। কু**র বাচ্চা। তুই গোবিন্দল গ্রাম সম্বন্ধে কিছুই জানস না। তোর কি অবস্থা করি দেখবি।’ উত্তেজিত কন্ঠে এসব কথা এবং অশ্লীল ভাষায়গালাগালি করে ০১৭৫২**২৭১৭ থেকে একটি কল আসে মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার দৈনিক ইত্তেফাকের প্রতিনিধি ও জেলা সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মানবেন্দ্র চক্রবর্তীর ০১৭১৬০**৪৯৮ মুঠোফোনে।
সিংগাইর পৌর বিএনপির প্রচার সম্পাদকও সাবেক কাউন্সিলর নুরে আলম বাবুলের ব্যবহৃত ঐ মুঠো ফোনের হুমকির ভয়ে জানমালের নিরাপত্তহীনতা চেয়ে মঙ্গলবার রাতে থানায় তিনি একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন।
‘সিংগাইরে আসামি ছাড়িয়ে নিতে থানায় ঢুকে পুলিশকে হুমকি’ দুই যুবদল নেতা গ্রেফতার’ শিরোনামে গত ৭ এপ্রিল দৈনিক ইত্তেফাকে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদে উল্লেখ ছিল গত শনিবার রাতে এজাহারভুক্ত এক আসামিকে ছাড়িয়ে নিতে মদ্যপ অবস্থায় থানায় ঢুকে পুলিশ সদস্যদের গালাগাল ও হুমকির ঘটনায় দুই যুবদল নেতাকে আটক করেছে পুলিশ।
আটককৃতরা হলেন- পৌর যুবদলের সদস্য সচিব গোবিন্দল এলাকার মো. শফিকুল ইসলাম জীবন ও একই এলাকার ৭ নং ওয়ার্ডের যুবদলের সদস্য শফিকুল ইসলাম। ঐ এলাকার আরিফ নামে এজাহারভুক্ত আসামিকে গ্রেফতার করা হলে যুবদলের ঐ দুই নেতা থানায় এসে আসামি ছেড়ে দেওয়ার জন্য পুলিশ সদস্যদের গালাগালি করে এবং হুমকি দেয়। পরে তাদের আটক করা হয়। তারা মদ্যপান থাকার কারণে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ওয়াশ করানো হয়। থানার দালাল হিসেবে পরিচিত এলাকার সাবেক এক জন প্রতিনিধিও তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন থেকে আসামি ছেড়ে দেওয়ার জন্য মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। তিনি বিগত সরকারের আমলেও থানার দালালি করতেন। থানার ওসি তৌফিক আজমের এই বক্তব্য নিয়েই এ সংবাদটি প্রকাশিত হয়। কারো নাম সংবাদে উল্লেখ না থাকলেও নিজেকে অভিযুক্ত ভেবে বিএনপি এই নেতা এ হুমকি দেন।
হুমকির নিন্দা জানিয়ে জেলা বিএনপির আহবায়ক আফরোজা খান রিতা বলেন, থানায় মাতলামি করার কারণে ওদের দল থেকে বহিষ্কার করেছি বলেই নিউজ হয়েছে। বাবুল কেন সাংবাদিককে হুমকি দেবে? দলের হলেও আমি তাকে পছন্দ করি না। ও একটা বদমায়েশ। ওর নামে জিডি করুন। ওকে বহিষ্কার করা হবে।
বিএনপির অপর নেতা সাবেক সংসদ সদস্য প্রকৌশলী মঈনুল ইসলাম খান শান্ত বলেন, রাজনৈতিকভাবে বিএনপি একটা বড় দল। কিন্তু আমরা এখনো আর ক্ষমতায় আসিনি। আমি এমপি না বলে পুরোপুরি এগুলো বন্ধ করার মত সুযোগ নেই। দলের খারাপ যারা তাদের আমি পছন্দ করি না। আমি তার সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলবো।
মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপার মোছা. ইয়াসমিন খাতুন বলেন, বাবুলের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য থানার ওসিকে বলা হয়েছে।
থানার ওসি তৌফিক আজম বলেন, এখানে যোগদান করার পর জানতে পেরেছি যে, আগে থেকেই বাবুল চিহ্নিত দালাল। এর আগে আমার এক এসআইকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছে সে। আমরা গত ৫ এপ্রিল তার বিরুদ্ধে থানায় জিডি করে স্টাফদের বলে দিয়েছি সে যেন থানায় না ঢুকতে পারে।