শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২
The Daily Ittefaq

যুক্তরাষ্ট্রে টিপিএস সুরক্ষা হারাচ্ছেন আফগান ও ক্যামেরুনের অভিবাসীরা  

আপডেট : ১২ এপ্রিল ২০২৫, ১৩:২২

যুক্তরাষ্ট্রে অস্থায়ী সুরক্ষা (টেম্পোরারি প্রোটেক্টেড স্ট্যাটাস—টিপিএস) পাওয়ার সুযোগ থাকা আফগানিস্তান ও ক্যামেরুনের হাজারো নাগরিক এখন সেই সুবিধা হারাতে যাচ্ছেন। দেশটির হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ জানিয়েছে, তাদের আর যুক্তরাষ্ট্রে থাকার জন্য বিশেষ সুরক্ষা থাকবে না এবং বিতাড়নের শঙ্কায় পড়বেন তারা। খবর বিবিসির।

যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের মন্ত্রী ক্রিস্টি নোয়েম মনে করছেন, আফগানিস্তান ও ক্যামেরুনের বর্তমান পরিস্থিতি এমন নয় যে, ওই দেশগুলোর নাগরিকদের টিপিএস সুবিধা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে থাকার অনুমতি দেওয়া উচিত। সহকারী মন্ত্রী ট্রিসিয়া ম্যাকলগ্নিন এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

বর্তমানে ১৪ হাজার ৬০০ আফগান নাগরিক টিপিএস সুবিধার আওতায় যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, তারা আগামী মে মাসেই সেই সুরক্ষা হারাবেন। অন্যদিকে, ক্যামেরুনের প্রায় ৭ হাজার ৯০০ নাগরিক জুন মাসে এই সুরক্ষা হারাতে যাচ্ছেন।

এই ঘোষণা এমন এক দিনে এলো, যেদিন কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত শিক্ষার্থী মাহমুদ খলিলের বিতাড়নের বিষয়ে অভিবাসন আদালত মত দিয়েছে। জানা গেছে, ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভে অংশগ্রহণের কারণে তার এ অবস্থা হয়েছে।

টিপিএস সাধারণত সেসব দেশের নাগরিকদের দেওয়া হয়, যেসব দেশে সশস্ত্র সংঘাত, প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা অন্য কোনো কারণে ফিরে যাওয়া নিরাপদ নয় বলে বিবেচিত হয়। এই সুরক্ষা মূলত ১৮ মাসের জন্য দেওয়া হয় এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী চাইলে তা নবায়ন করতে পারেন। টিপিএসের আওতায় থাকা ব্যক্তিরা যুক্তরাষ্ট্রে বৈধভাবে কাজ করার সুযোগ পান এবং তাদের জোরপূর্বক বহিষ্কার করা যায় না।

২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে তৎকালীন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি মন্ত্রী আলেজান্দ্রো মায়োরকাস আফগানদের টিপিএস সুবিধার মেয়াদ ২০২৫ সালের ২০ মে পর্যন্ত বাড়ান। তবে চলতি বছরের ২১ মার্চ বর্তমান মন্ত্রী ক্রিস্টি নোয়েম নতুন সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে, আফগানিস্তান ও ক্যামেরুন বর্তমানে টিপিএসের শর্ত পূরণ করছে না।

ম্যাকলগ্নিন জানান, আফগানিস্তানের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন সংস্থা ইউএসসিআইএসের বিশ্লেষণ এবং ক্যামেরুন সংক্রান্ত তথ্য পর্যালোচনার পরই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। উল্লেখযোগ্য যে, প্রায় চার বছর আগে আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবান।

এছাড়া, গত মাসে ট্রাম্প প্রশাসন ঘোষণা দেয় যে, কিউবা, হাইতি, নিকারাগুয়া ও ভেনেজুয়েলার প্রায় পাঁচ লাখ অভিবাসীর অস্থায়ী বৈধতার মর্যাদা বাতিল করা হবে। এদের বেশিরভাগই বাইডেন প্রশাসনের আমলে চালু হওয়া সিএইচএনভি (CHNV) কর্মসূচির আওতায় যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছিলেন। সেই কর্মসূচির আওতায় কেবল ভেনেজুয়েলাই থেকে এসেছে ১ লাখ ২০ হাজার ৭০০ জনের বেশি মানুষ।

সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তগুলো অভিবাসন নীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর অবস্থানেরই ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এখন দেখার বিষয়—এই সিদ্ধান্তগুলো কতটা প্রভাব ফেলবে মার্কিন অভিবাসনব্যবস্থা ও অভিবাসীদের মানবিক বাস্তবতায়।

ইত্তেফাক/টিএইচ