নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আলোচিত জাকির খান কারামুক্তি পেয়েছেন। রোববার (১৩ এপ্রিল) সকালে জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি। মুক্তির পর শত শত মোটরসাইকেল ও গাড়ি নিয়ে শহরজুড়ে মহড়া দিয়ে আনন্দ উল্লাস করেন তার অনুসারীরা।
কারাগারের জেল সুপার মোহাম্মদ ফোরকান ওয়াহিদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সকাল সোয়া ১০টায় জাকির খান কারাগার থেকে বের হয়েছেন। তিনি গত ১৯ মার্চ কাশিমপুর কারাগার থেকে নারায়ণগঞ্জ কারাগারে অবস্থান করছিলেন।
জাকির খানের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রাজিব মণ্ডল বলেন, দীর্ঘদিন পর মুক্ত বাতাসে ফিরেছেন জাকির খান। তাকে পেয়ে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হয়ে পড়েছেন। তারা অনেক বেশি আনন্দিত।
এদিকে, জাকির খানের কারামুক্তি উপলক্ষে সকাল থেকে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজন নারায়ণগঞ্জ কারাগারের সামনে ভিড় করতে থাকেন। সকাল ১০টা নাগাদ বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী জড়ো হন। সাউন্ডবক্স, শত শত মোটরসাইকেল ও গাড়ি নিয়ে কারাগারের সামনে জড়ো হন তারা। কারাগার থেকে বের হওয়ার পর নেতাকর্মীদের মধ্যে হৈ-হুল্লোড় পড়ে যায়। এতে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড থেকে শুরু করে শহড়জুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। জাকির খানের অনুসারীরা শত শত মোটরসাইকেল ও গাড়ি নিয়ে শহরে উল্লাস করেন।
আদালত-সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, চারটি হত্যা মামলাসহ মোট ৩৩টি মামলার আসামি ছিলেন জাকির খান। দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর ২০২২ সালের ৩ সেপ্টেম্বর র্যাব-১১-এর একটি অভিযানে ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে তিনি গ্রেপ্তার হন। এরপর ধাপে ধাপে বিভিন্ন মামলায় জামিন পান তিনি। চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি সাব্বির আলম হত্যা মামলার রায়ে তিনি ও মামলার অন্য আসামিরা খালাস পান।
এদিকে জাকির খানের আইনজীবী মো. রবিউল হোসেন জানান, আলোচিত ব্যবসায়ী নেতা সাব্বির আলম খন্দকার হত্যা মামলায় সাবেক এমপি গিয়াস উদ্দিন ও তৈমূর আলম খন্দকার ষড়যন্ত্র করে জাকির খানকে মামলার আসামি করেছেন। ২০০৩ সালে অপারেশন ক্লিন হার্ট চলার সময় ১৮ ফেব্রুয়ারি সাব্বির আলম খন্দকার খুন হওয়ার পর এ মামলার আসামি হওয়ায় তিনি নারায়ণগঞ্জ ছেড়ে থাইল্যান্ডে পাড়ি জমান। সেখানে সুকুমবিকে কয়েক কোটি টাকা দিয়ে ‘গ্রেস’ নামে আট তলাবিশিষ্ট একটি থ্রি-স্টার হোটেল কিনে ব্যবসা পরিচালনা করেন। তবে দীর্ঘ সময় তিনি নারায়ণগঞ্জের রাজনীতি থেকে দূরে থাকলেও তার অনুসারীরা জাকির খানের পক্ষে রাজনীতি মাঠ সরগম করে রেখেছিলেন।
নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা-২ আদালতের বিচারক শাম্মী আক্তারের আদালতে সাব্বির আলম খন্দকার হত্যা মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। হত্যা মামলা থেকে খালাস পাওয়া ও অন্যান্য মামলায় জামিন পাওয়ায় তিনি কারামুক্ত হন।