নীলফামারী জেলার লক্ষীচাপ ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গনেশ রায়ের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে।
শেখ হাসিনা আমলে তদবিরের মাধ্যমে লক্ষীচাপ কমিউনিটি ক্লিনিকে চাকরি পান গনেশ৷ স্থানীয় অনেকের অভিযোগ, হাসিনা আমলে সময়মতো অফিসে আসতেন না তিনি। সেই সঙ্গে সরকার থেকে পাওয়া বিনামূল্যে ওষুধ রোগীদের ঠিকমতো না দিয়ে বেশিরভাগ সময় তিনি বিক্রি করতেন বাজারে।
এ ছাড়া ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, গ্রামের সহজ সরল নারীদের সরলতার সুযোগ নিয়ে অনৈতিক কাজে লিপ্ত করতেন তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এমনি একজন ভুক্তভোগী এই প্রতিবেদককে বলেন, ২০২৩ সালে চিকিৎসাসেবা নিতে গেলে গনেশ অনৈতিক প্রস্তাব দেন। কিন্তু হাসিনা সরকার ক্ষমতায় থাকায় মুখ খোলার সাহস কুলায়নি।
আরেক নারী বলেন, সংসারে অভাব থাকায় বিনামূল্যে ওষুধ পাওয়ার জন্য কমিউনিটি ক্লিনিকে যেতাম। কিন্তু ওষুধ চাইলে গনেশ খারাপ প্রস্তাব দিতো।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকায় তিনিও ভয়ে কাউকে বিচার দেওয়ার সাহস পাননি বলে দাবি করেন। ক্লিনিকের মধ্যে অসামাজিক কার্যকলাপে গনেশ জড়িত বলেও কয়েকজন অভিযোগ করেছেন।
এ ছাড়া আওয়ামী লীগের এই নেতার বিরুদ্ধে সুদের ব্যবসারও অভিযোগ রয়েছে। সুদের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় জোরপূর্বক জমি দখল করেছেন বলেও ভুক্তভোগী এক ব্যক্তি জানান এই প্রতিবেদককে।
এ ছাড়া গনেশের বিরুদ্ধে আওয়ামী আমলে ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে এলাকার কাছারী বাজারে বিএনপি ও জামায়াতের নেতা-কর্মীদের দোকান ও বাড়িঘরে আগুন দেওয়া ও লুটপাটের অভিযোগ রয়েছে।
তবে হাসিনা সরকারের পতন হলেও গনেশ স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াত কর্মীদের 'যোগসাজশে' মামলা থেকে রেহাই পান বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
এ নিয়ে লক্ষীচাপ ইউনিয়নের বিএনপি সভাপতি আকবর আলী দৈনিক ইত্তেফাককে বলেন, আমি শুনছি মামলা হয়েছে, তবে পরে শুনি কে নাকি কী করেছে, টাকা দিয়ে মামলা থেকে রেহাই পেয়েছে।
তবে গনেশ কাকে টাকা দিয়েছেন তা বলতে পারেননি আকবর আলী।
গনেশের বিরুদ্ধে থানায় কোনো অভিযোগ বা মামলা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে নীলফামারী থানার ওসি খান মো. শাহরিয়ার ইত্তেফাককে নিশ্চিত করেছেন যে, মামলা হয়নি।
টাকার বিনিময়ে গনেশ মামলা থেকে রেহাই পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, আমার জানা নেই।
এদিকে গনেশের ব্যক্তিগত মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া গেছে।