মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২
The Daily Ittefaq

নতুন শিল্প আনতে হলে গুনতে হবে বাড়তি গ্যাস বিল 

এপ্রিলেই নতুন দর কার্যকর 
নতুন বিনিয়োগ অনুৎসাহিত হওয়ার আশঙ্কা 

আপডেট : ১৪ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৪০

বিদ্যমান শিল্পে অপরিবর্তিত রেখে নতুন শিল্পের গ্যাসের দাম বাড়ল। শিল্পে ব্যবহৃত প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম ৩০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪০ টাকা এবং ক্যাপটিভে ৩১ টাকা ৭৫ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৪২ টাকা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। এছাড়া বর্তমানে যারা অনুমোদিত লোডের বেশি গ্যাস ব্যবহার করছেন সেসব শিল্পপ্রতিষ্ঠানকেও ৩০ টাকার পরিবর্তে ৪০ টাকা দরে বিল দিতে হবে। নতুন মূল্যহার চলতি এপ্রিল মাস থেকেই কার্যকর হবে। 

রোববার (১৩ এপ্রিল) রাজধানীতে বিইআরসির সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ নতুন মূল্যহার ঘোষণা করেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য মিজানুর রহমান, সদস্য সৈয়দা সুলতানা রাজিয়া, মো. আব্দুর রাজ্জাক ও শাহীদ 

বিদ্যমান গ্রাহকদের ব্যবহৃত গ্যাসের মূল্যহার (শিল্প ও ক্যাপটিভে গ্যাসের দাম যথাক্রমে ৩০ ও ৩১ টাকা ৭৫ পয়সা) অপরিবর্তিত রেখে নতুন ও প্রতিশ্রুত গ্রাহকদের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করেছিল পেট্রোবাংলা। প্রতিশ্রুত গ্রাহকদের (ইতিমধ্যে অনুমোদিত) অর্ধেক বিল বিদ্যমান দরে, অর্ধেক ৭৫.৭২ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়। 

পেট্রোবাংলার মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাবের ওপর গত ২৬ ফেব্রুয়ারি শুনানি গ্রহণ করে বিইআরসি। পেট্রোবাংলা তাদের প্রস্তাবে বলেছে, দাম না বাড়ালে বছরে প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকা ঘাটতি হবে। পেট্রোবাংলার সেই প্রস্তাবে আপত্তি জানিয়েছিলেন ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিরাসহ অংশীজনরা। শিল্পে দুই ধরনের দর করার বিরোধিতা করেন প্রায় সবাই। তারা বলেন, বিদ্যমান শিল্পে অপরিবর্তিত দরে আর নতুন শিল্পের জন্য বাড়তি দাম নির্ধারণ করা হলে অসম প্রতিযোগিতা তৈরি হবে। নতুন বৈষম্য তৈরি হবে। একই দেশে একই শ্রেণির গ্রাহকদের জন্য পৃথক দুটি মূল্যহার আইনিভাবেও সিদ্ধ নয়। 

প্রশ্নের জবাবে বিইআরসি চেয়ারম্যান বলেন, একই গ্রাহক শ্রেণির জন্য পৃথক মূল্যহার আইনগতভাবে বৈধ। বিদ্যমান শিল্পে দরকারি সরবরাহ বজায় রাখাএবং নতুন শিল্পে বিকল্প জ্বালানিতে উৎসাহিত করতে এমন মূল্যহার নির্ধারণ করা হয়েছে। শিল্পে বিকল্প জ্বালানি হিসেবে এলপিজি এবং নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ ব্যবহৃত হতে পারে। 

পেট্রোবাংলা কয়েকটি উৎস থেকে গ্যাস কিনে থাকে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান সিলেট গ্যাস ফিল্ড কোম্পানি ও বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ড কোম্পানিকে প্রতি হাজার ঘনফুটের দাম দেওয়া হয় ২৮ টাকার মতো, আর বাপেক্সকে দেওয়া হয় ১১২ টাকার মতো। দেশের খনি থেকে গ্যাস উত্তোলন করা বহুজাতিক কোম্পানি শেভরন বাংলাদেশকে প্রতি হাজার ঘনফুট গ্যাস দেয় ২.৭৬ ডলারে; টাল্লোকে দেওয়া হয় ২.৩১ ডলার। অন্যদিকে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে কাতার থেকে আমদানি করা এলএনজির দাম ১০.৬৬ ডলার ও ওমান থেকে আনা এলএনজির দাম পড়ছে ১০.০৯ ডলার। তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে কয়েক দশকের স্থবিরতার কারণে আমদানির দিকে যেতে হয়েছে।

 

 

ইত্তেফাক/টিএইচ