বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
The Daily Ittefaq

ট্রাম্পের ‘না’ সত্ত্বেও ইরানে হামলা করতে চায় ইসরায়েল

আপডেট : ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৯:৪২

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে জানিয়ে দিয়েছেন, আপাতত ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সমর্থন নেই। তবুও আগামী মাসগুলোতে তেহরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলা চালানোর কথা ভাবছে উগ্র ইহুদিবাদী নেতানিয়াহু সরকার।

একজন ইসরায়েলি কর্মকর্তা এবং বিষয়টির সঙ্গে পরিচিত আরও দুই ব্যক্তির বরাতে শনিবার (১৯ এপ্রিল) রয়টার্সের প্রতিবেদনে এমনটাই দাবি করা হয়েছে।

সূত্রগুলো রয়টার্সকে জানিয়েছে, গত কয়েক মাস ধরে ইসরায়েল ট্রাম্প প্রশাসনের কাছে ইরানের স্থাপনাগুলোতে হামলার জন্য বেশ কয়েকটি বিকল্প প্রস্তাব করেছে। পরিকল্পনাগুলোর মধ্যে বিমান হামলা এবং কমান্ডো অভিযান অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এটি তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে 'অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করার ক্ষমতা' মাত্র কয়েক মাস বা এক বছর কিংবা তারও বেশি সময়ের জন্য পিছিয়ে দিতে পারে।

এর আগে গত বুধবার নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, ট্রাম্প এই মাসের শুরুতে হোয়াইট হাউসে এক বৈঠকে নেতানিয়াহুকে জানিয়ে দিয়েছেন, ওয়াশিংটন তেহরানের সঙ্গে কূটনৈতিক আলোচনাকে অগ্রাধিকার দিতে চায় এবং দেশটির পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলা আপাতত সমর্থন করেন না।

কিন্তু নেতানিয়াহুর প্রশাসন এখনো মনে করে, তাদের বাহিনী ইরানের ওপর সীমিত আকারে হামলা চালাতে পারে, যার জন্য মার্কিন সহায়তার খুব কমই প্রয়োজন হবে। ইসরায়েল প্রাথমিকভাবে যে প্রস্তাব করেছিল, এই ধরনের হামলা তার চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে ছোট হবে।

রয়টার্সের প্রতিবেদন বলছে, ইসরায়েল কখন এই ধরনের হামলা চালাবে তা স্পষ্ট নয়, বিশেষ করে যখন পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে আলোচনা শুরু হচ্ছে। এই ধরনের পদক্ষেপ ইসরায়েলের প্রতি মার্কিন সমর্থন আরও বৃদ্ধির ঝুঁকিতে ফেলতে পারে।

বাইডেন প্রশাসনের দুই প্রাক্তন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, পরিকল্পনার কিছু অংশ গত বছর বাইডেন প্রশাসনের কাছেও উপস্থাপন করা হয়েছিল। প্রায় সব পরিকল্পনার জন্যই সরাসরি সামরিক হস্তক্ষেপ বা গোয়েন্দা তথ্য ভাগাভাগির মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য মার্কিন সহায়তা প্রয়োজন। ইরানের প্রতিশোধ নেওয়ার ক্ষেত্রে ইসরায়েলকে আত্মরক্ষায় সহায়তা করার জন্য ওয়াশিংটনের কাছেও অনুরোধ করেছে ইসরায়েল।

তবে ইসরায়েলি নতুন হামলার ছক সম্পর্কে নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্যের অনুরোধের জবাব দেওয়া হয়নি। একজন জ্যেষ্ঠ ইসরায়েলি কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, ইরানে হামলার বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।

ইরানের একজন জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, তেহরান ইসরায়েলি পরিকল্পনা সম্পর্কে অবগত ছিল। হামলার ফলে তারা ইরানের পক্ষ থেকে কঠোর ও অটল প্রতিক্রিয়া পাবে।

ইরানি কর্মকর্তা আরও বলেন, আমাদের কাছে নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে গোয়েন্দা তথ্য আছে যে, ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে একটি বড় ধরনের হামলার পরিকল্পনা করছে। ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে চলমান কূটনৈতিক প্রচেষ্টার প্রতি অসন্তুষ্টি এবং রাজনৈতিকভাবে বেঁচে থাকার উপায় হিসেবে নেতানিয়াহু সংঘাত চায়, যার ফলে এটি ঘটেছে।

ইত্তেফাক/এসকে