শনিবার, ২৪ মে ২০২৫, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
The Daily Ittefaq

মনোহরগঞ্জে মধ্যরাতে আগুনে পুড়লো ১১ দোকান  

আপডেট : ২০ এপ্রিল ২০২৫, ১২:২৬

কুমিল্লার মনোহরগঞ্জে মধ্যরাতে এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে গেছে ১১টি দোকান। শুক্রবার দিবাগত রাত প্রায় আড়াইটায় উপজেলার লক্ষণপুর বাজারে এ ঘটনা ঘটে। এতে প্রায় অর্ধকোটি টাকার ক্ষতিসাধিত হওয়ার কথা জানান ব্যবসায়ীরা। ফায়ার সার্ভিসের দু’টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

বাজার ব্যবসায়ীরা জানান, শুক্রবার দিবাগত রাত প্রায় আড়াইটায় লক্ষণপুর পশ্চিম বাজারে আবুল কাসেমের চা দোকানে আগুন লাগে। বাজারে কর্তব্যরত নৈশ প্রহরী দোকানে আগুন দেখতে পেয়ে মসজিদের মাইকে এলান করলে বাজার ব্যবসায়ী ও আশপাশের লোকজন ছুটে এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। আগুনের লেলিহান শিখা মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়লে ঐ দোকানে থাকা ১টি গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়। এতে আগুন আরও ভয়াবহ রূপ নেয়, পরবর্তীতে পাশের দোকানে থাকা আরও ২/৩ টি সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হলে আগুন নিয়ন্ত্রণের বাহিরে চলে যায়। পরে মনোহরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের দু’টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছলে ব্যবসায়ী ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় ঘন্টাব্যাপী চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। 

ব্যবসায়ীদের ভাষ্য অনুযায়ী, এর আগেই পুড়ে ছাই হয়ে যায় নুরুল ইসলামের চা দোকান, দিপুর ফার্মেসি, ইলিয়াস টেলিকম, ইলিয়াস স্টোর, সোহাগ অটো বাইক এন্ড ওয়ার্কসপ, বিসমিল্লাহ মেটাল, বাবুল ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কসপ, লক্ষণপুর ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কসপ, মা মনি ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কসপসহ ১১টি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে যায়। 

ইলিয়াস টেলিকম ও ইলিয়াস স্টোর এর স্বত্বাধিকারী ব্যবসায়ী ইলিয়াস হোসেন জানান, প্রবাস থেকে বাড়ি এসে গেল রমজানের আগে নতুন দোকান শুরু করেন তিনি। নিজের সামান্য পুঁজি ও স্থানীয় এনজিও থেকে লোন নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন তিনি। তার দোকানে থাকা প্রায় ২৫টি এ্যান্ড্রয়েড মোবাইলসহ প্রায় ৬০টি মোবাইল ফোন, মোবাইল এক্সেসরিজ, মোবাইল সার্ভিসিং এর প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি, বৈদ্যুতিক পাখাসহ ইলেকট্রনিক্স সব মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে যায়। ব্যবসার সকল মালামাল আগুনে পুড়ে যাওয়ায় কিস্তির টাকা পরিশোধ নিয়ে হতাশায় ভুগছেন তিনি। 

সোহাগ অটো বাইক এর স্বত্বাধিকারী মো. সোহাগ বলেন, নিজে অসুস্থ থাকায় সেদিন দোকান খোলেননি। মধ্যরাতে খবর পেয়ে ছুটে এসে দেখেন দোকানে আগুন জ্বলছে। ব্রাক ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করার কথা জানান তিনি। চোখের সামনে আগুনে নিজ দোকানের মালামাল পুড়ে গেছে বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন তিনি। 

এ বিষয়ে কথা হলে মনোহরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মাসুম মিয়া বলেন ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট প্রায় ঘন্টাব্যাপী চেষ্টার পর স্থানীয়দের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এর মধ্যে প্রায় ১১টি দোকান পুড়ে যাওয়ার কথা জানান তিনি। 

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহরিয়া ইসলামের সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।                    

মনোহরগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ বিপুল চন্দ্র দে অগ্নিকাণ্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ইত্তেফাক/এএইচপি