জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্যোগে বিএনপি ‘সিরিয়াসলি’ সহযোগিতা করছে বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দীন আহমেদ। তিনি বলেন, আমরা সব বিষয়ে স্বচ্ছতার সঙ্গে, আন্তরিকতা সঙ্গে এবং সিরিয়াসলি সংস্কার কার্যক্রমের সঙ্গে সহযোগিতায় আছি।
রোববার (২০ এপ্রিল) জাতীয় সংসদের এলডি হলে দ্বিতীয় দিনের সংস্কার নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি প্রতিনিধিদল। সেখানে এসব কথা বলেন সালাহউদ্দীন আহমেদ। বেলা ১১টায় বৈঠক শুরু হয়ে দুপুরে একটি বিরতি দিয়ে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলে।
বৃহস্পতিবারে দিনব্যাপী বৈঠকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ও বিএনপি সংবিধান ও বিচার ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশ নিয়ে আলোচনা করে। সেদিন সব প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা না হওয়ায় আজ আবার বৈঠক হয়েছে।
বৈঠকে শেষে বিকেলে একই জায়গায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনার বিভিন্ন বিষয় সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, আমরা বলেছি যে, রাষ্ট্রপতিকে কী কী বিষয়ে ক্ষমতায়িত করে আইন প্রণয়ন করা যায় সেসব কিছু বিষয়ে এবং নিয়োগের কিছু বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি। সেগুলো নতুন আইন প্রণয়ন করে সংসদ প্রণীত করা যাবে। সেক্ষেত্রে চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স এবং রাষ্ট্রপতির আরো ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা হবে।
সংসদ সদস্যদের নিজ দলের বিপক্ষে ভোট দেওয়ার সুযোগ নিয়ে আলোচনা প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, আস্থা ভোট, অর্থনৈতিক বিষয়াবলি, সংবিধান সংশোধন ও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তাসংশ্লিষ্ট বিষয়ে সংসদ সদস্যরা দলের বিপক্ষে ভোট দিতে পারবেন না। অন্য বিষয়গুলোতে সংসদ সদস্যদের ভোট দেওয়ার স্বাধীনতার পক্ষে বিএনপি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, আমাদের প্রচেষ্টা থাকলেও সংস্কারের প্রশ্নে কমিশনের সাথে আলোচনা সম্পন্ন হয়নি। ২২ তারিখে আমরা আবার তাদের সঙ্গে বসবো। সেদিনের বৈঠকে সংস্কারের সব প্রশ্নে একটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো যাবে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও পঞ্চদশ সংশোধনী প্রসঙ্গ, তত্ত্বাবধায়ক সরকার হলে প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণ পদ্ধতি এবং প্রধান বিচারপতি নিয়ে আরও আলোচনা চলবে বলে জানান সালাহউদ্দিন আহমদ।
বিচার বিভাগ ও সংবিধান সংস্কারের বিষয়গুলো পরবর্তী আলোচনায় চূড়ান্ত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, ‘আমরা সংস্কারের বিষয়ে ইতিবাচকভাবে কাজ করছি। রাষ্ট্রের গণতন্ত্র রক্ষায় বিএনপি সরকার ও কমিশনকে সহযোগিতা করতে চায়।’
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজের সভাপতিত্বে ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় বৈঠকে ছিলেন কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বদিউল আলম মজুমদার ও ড. ইফতেখারুজ্জামান।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দীন আহমেদের সভাপতিত্বে দলটির পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দলে ছিলেন—স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মো. ইসমাইল জবিউল্লাহ, দলটির নির্বাহী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল এবং আবু মো. মনিরুজ্জামান খান।
