রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলায় এসএসসি পরীক্ষায় কেন্দ্র সচিবের যোগসাজশে নকল সরবরাহের সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিককে ‘হাঁটু ভেঙে পঙ্গু’ করে দেওয়ার হুমকির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় মিঠাপুকুর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন ভুক্তভোগী সাংবাদিক।
সোমবার (২১ এপ্রিল) সন্ধ্যায় দৈনিক আমাদের সময়ের রংপুর প্রতিনিধি খন্দকার রাকিবুল ইসলামকে মুঠোফোনে হাঁটু ভেঙে পঙ্গু করে দেওয়ার হুমকি দেন পায়রাবন্দ বেগম রোকেয়া স্মৃতি গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মাহেদুল আলম।
এর আগে সোমবার বিকেলে 'চুক্তিতে নকল সরবরাহের প্রতিযোগিতা এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে' শিরোনামে দৈনিক আমাদের সময় ও ডেইলি ক্যাম্পাস পত্রিকায় একটি সংবাদ প্রচারিত হয়। সংবাদটিতে চলমান এসএসসি পরীক্ষায় ইংরেজি প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র, গণিত,রসায়ন,পদার্থ ও জীব বিজ্ঞানসহ ছয়টি বিষয়ের প্রতিপত্রে ৫০০ থেকে ১০০০ টাকার চুক্তিতে পায়রাবন্দ বেগম রোকেয়া স্মৃতি গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মাহেদুল আলমের যোগসাজশে ওই প্রতিষ্ঠানের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী হায়দার, অলি, রায়হান, সোহাগী ও শিক্ষক মুসাকে দিয়ে প্রতি রুমে উত্তরপত্র সরবরাহ করা হচ্ছে বলে উল্লেখ করা হয়।
এদিকে হুমকি দেয়ার ঘটনায় একটি অডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পরে এনিয়ে তীব্র সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে। এঘটনায় অভিযুক্ত অধ্যক্ষের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন সাংবাদিক নেতারা।
রিপোর্টাস ক্লাব রংপুরের সভাপতি ও একাত্তর টিভির রংপুর ব্যুরো প্রধান শাহ বায়েজিদ আহমেদ বলেন, সংবাদ প্রকাশের জেরে অধ্যক্ষ মাহেদুল আলম 'দৈনিক আমাদের সময়'-এর রংপুর প্রতিনিধি ও রিপোর্টার্স ক্লাব রংপুরের কার্যকরী কমিটির সদস্য খন্দকার রাকিবুল ইসলামকে পঙ্গু করে দেয়ার হুমকি দিয়েছে। এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এ বিষয়ে প্রশাসন অতিদ্রুত তদন্ত করে ব্যবস্থা না নিলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে এবং অধ্যক্ষের শাস্তি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত প্রতিবাদ চলমান থাকবে।
ভুক্তভোগী সাংবাদিক খন্দকার রাকিবুল ইসলাম জানান, সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে প্রতিবেদন করেছিলাম। কিন্তু আমাকে যেভাবে হুমকি দেওয়া হলো এটি কোনো শিক্ষকের আচরণ হতে পারে না। শিষ্ঠাচার বহির্ভূত আচরণ ও আমাকে আক্রমণের হুমকি প্রদান করার জন্য এবং অর্থের বিনিময়ে নকল বাণিজ্য করার জন্য অতিদ্রুত তদন্ত করে এই শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। এই হুমকি বাক স্বাধীনতা ও সংবাদপত্রের কণ্ঠরুদ্ধ করার অপচেষ্টা।
অভিযুক্ত অধ্যক্ষ মাহেদুল আলম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে গণমাধ্যমকে বলেন, সাংবাদিক রাকিবুল ইসলাম আমার পাশের গ্রামের বাসিন্দা। আমার পরিচিত মানুষ। এ কারণে তাকে এভাবে বলেছি। তবে, তার প্রতি আমার কোনো ক্ষোভ নেই।
মিঠাপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বক্কর সিদ্দীক বলেন, এ ঘটনায় ভুক্তভোগী সাংবাদিক বাদী হয়ে মিঠাপুকুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।