বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
The Daily Ittefaq

টিউলিপের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ দিতে পারেনি দুদক: আইনজীবী

আপডেট : ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৫৮

ব্রিটিশ এমপি ও সাবেক সিটি মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে আনা দুর্নীতি ও সম্পদ গোপনের অভিযোগের পক্ষে কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ হাজির করতে পারেনি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এমন দাবি তুলেছেন টিউলিপের আইনজীবীরা। তারা অভিযোগ করেছেন, বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ সুষ্ঠু আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে টিউলিপের ন্যায়বিচারের মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্ন করছে।  

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ইভিনিং স্ট্যান্ডার্ড জানায়, লন্ডনভিত্তিক আইন সংস্থা ‘স্টিফেনসন হারউড’ এর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, টিউলিপের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে বাংলাদেশের আদালতে মামলার আবেদন, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা, এমনকি ইন্টারপোল রেড নোটিশের হুমকি দেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত তাকে বা তার আইনজীবীদের আনুষ্ঠানিকভাবে কিছুই জানানো হয়নি।  

আইনজীবীদের দাবি, এক মাস আগে দুদককে চিঠি পাঠিয়ে তথ্য-প্রমাণ চাওয়া হয়েছিল, কিন্তু কোনো জবাব মেলেনি। চিঠিতে বলা হয়েছে, দুদক সংবাদমাধ্যমে বক্তব্য দিয়ে এবং ‘ভীতি প্রদর্শনের কৌশল’ নিয়ে টিউলিপের সুনাম ক্ষুণ্ন করতে চাইছে।  

টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে মূল অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে লন্ডনে উপহার পাওয়া দুটি ফ্ল্যাটের তথ্য গোপন, ঢাকার পূর্বাচল প্রকল্পে মায়ের নামে প্লট বরাদ্দে প্রভাব খাটানো, এবং একটি বৃহৎ অবকাঠামো প্রকল্প থেকে ৫ বিলিয়ন ডলার আত্মসাতের অভিযোগে পরিবারের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা।  

এই অভিযোগে গত ১৩ এপ্রিল ঢাকার একটি আদালত তাকে ২৭ এপ্রিলের মধ্যে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয়। একই মামলায় টিউলিপের মা শেখ রেহানা, বড় ভাই রাদওয়ান মুজিব এবং ছোট বোন আজমিনার বিরুদ্ধেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।  

তবে টিউলিপ ও তার পরিবার শুরু থেকেই অভিযোগগুলো অস্বীকার করে আসছেন। জানুয়ারিতে তিনি ব্রিটিশ লেবার সরকারের মন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করেন।  

আইনজীবীরা বলছেন, আন্তর্জাতিক আইন ও ন্যায়বিচারের প্রক্রিয়া অনুযায়ী দুদকের আচরণ অস্বাভাবিক। তারা মনে করেন, এটি ইঙ্গিত দেয়—বাংলাদেশে টিউলিপের প্রতি পক্ষপাতমূলক আচরণ করা হচ্ছে।  

তবে এ বিষয়ে দুদক চেয়ারম্যান আবদুল মোমেন জানিয়েছেন, তারা টিউলিপের সঙ্গে চিঠি চালাচালি করবেন না, কারণ বিষয়টি আদালতের এখতিয়ারভুক্ত। তিনি বলেন, 'আদালতের আদেশ অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তিনি (টিউলিপ) হাজির না হলে তাকে পলাতক হিসেবে বিবেচনা করা হবে।'  

টিউলিপের আইনজীবীরা মনে করেন, দুদকের উচিত রাজনৈতিক চাপের বাইরে থেকে নিরপেক্ষভাবে আচরণ করা এবং সরাসরি আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা। তবে এখন পর্যন্ত তাদের পাঠানো দুটি চিঠিরও কোনো জবাব পাওয়া যায়নি বলে জানায় স্টিফেনসন হারউড।

ইত্তেফাক/টিএইচ