রাজধানীর কেরানীগঞ্জে গুরুত্বপূর্ণ একটি সংযোগ সড়কের উভয়পাশ ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। তেঘরিয়া ইউনিয়নের করেরগাও এলাকার রতনের খামারমুখি প্রায় দুই কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করা কেরানীগঞ্জের বাসিন্দারা নানারকম দুর্ভোগে পড়ছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ব্যস্ততম এই সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন শত শত মানুষ ও যানবাহন কেরানীগঞ্জ থেকে ঢাকা-ভাঙা এক্সপ্রেসওয়ের দিকে যাতায়াত করে। অথচ সড়কের দুই পাশ বাসা-বাড়ি এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বর্জ্যে ভরা। আবর্জনার স্তূপে ঢাকা পড়ছে সড়কের উভয়পাশ। ১২ ফুট প্রশস্ত সড়কটি এখন মাত্র ৩ ফুট ব্যবহারযোগ্য আছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, সড়কটির দুপাশে দাঁড়িয়ে আছে বর্জ্যবাহী ট্রাক, পিকআপ-ভ্যান। ময়লা ফেলার এসব যানগুলো বিভিন্ন এলাকার গৃহস্থালি, দোকান ও শিল্পকারখানার মিশ্রিত বর্জ্যে ভরা। কোথাও কোথাও পোড়ানো বর্জ্য থেকে ধোঁয়া উড়তে দেখা যায়।
দুপুর আড়াইটার দিকে ট্রাকে করে ময়লা-আবর্জনা ফেলতে দেখা যায় চালক মফিজ মিয়া নামক এক ব্যক্তিকে। তার সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘কেরানীগঞ্জের আগানগর এলাকার বাসা-বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে বর্জ্য সংগ্রহ করে ট্রাকে তুলি। ওইসব বর্জ্য এখানে ফেলি। প্রতিদিন এখানে অন্তত এক ট্রাক ময়লা ফেলে যাই।’
করেরগাঁও এলাকার বাসিন্দা আব্দুল হালিম (৫৩) বলেন, ‘গত ৫-৬ বছর ধরে ময়লা ফেলার কারণে আমাদের এ গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি এখন ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে।’
এ সড়কের পাশেই ‘কুয়েত প্রজেক্ট’ নামে একটি গ্রাম রয়েছে। যেখানে প্রায় সহস্রাধিক পরিবার বসবাস করছে। গ্রামটির একটি মাদ্রাসায় কয়েক শ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করেন। সড়কের দুপাশে ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারণে একদিকে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে, অন্যদিকে পুরো অঞ্চলজুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি।
কুয়েত প্রজেক্ট এলাকার বাসিন্দা মো. মাসুদ রানা (৩৪) বলেন, ‘একসময় এ সড়ক দিয়ে দুটি গাড়ি পাশাপাশি চলাচল করতো। আর এখন সেখানে ছোট একটি গাড়ি চালানো কঠিন।’
নাম না প্রকাশ করার অনুরোধ জানিয়ে এ গ্রামের এক বাসিন্দা বলেন, দুলাল মিয়া ও তার সহযোগী সিদ্দিক এখানে ময়লা ফেলার কাজ নিয়ন্ত্রণ করেন। ময়লা না ফেলার জন্য অভিযোগ দিলে তারা এলাকাবাসীকে হুমকি-ধামকি ও ভয়ভীতি দেখায়। প্রশাসন যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে এলাকার মানুষের দুর্ভোগ শেষ হবে না।
জানা যায়, রতনের খামার সড়ক এলাকায় ময়লা ফেলার কাজ নিয়ন্ত্রণ করেন দুলাল মিয়া (৪৬) নামের এক ব্যক্তি। এ বিষয়ে তার মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়।
সড়কের পাশে এভাবে যত্রতত্র বর্জ্য ফেলার কোনো সুযোগ নেই। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী।