সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
The Daily Ittefaq

জাপানকে ছাড়িয়ে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি এখন ক্যালিফোর্নিয়া  

আপডেট : ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ১৪:৪৫

বিশ্ব অর্থনীতির র‍্যাংকিংয়ে বড় ধরনের সাফল্য অর্জন করেছে মার্কিন অঙ্গরাজ্য ক্যালিফোর্নিয়া। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এবং যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ ব্যুরোর সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ক্যালিফোর্নিয়া এখন জাপানকে পেছনে ফেলে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতির স্থান দখল করেছে।  

২০২৪ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ১০ ট্রিলিয়ন ডলারে, যেখানে জাপানের জিডিপি হয়েছে ৪ দশমিক০১ ট্রিলিয়ন ডলার। ফলে ক্যালিফোর্নিয়া এখন কেবল যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও জার্মানির পেছনে রয়েছে।  

গভর্নর গ্যাভিন নিউসম এ সাফল্যের প্রশংসা করে বলেন, 'ক্যালিফোর্নিয়া শুধু বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলছে না—বরং গতিপথ নির্ধারণ করছে।' তবে এই উন্নয়নযাত্রা সামনে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে বলে সতর্ক করে দেন তিনি।  

নিউসম অভিযোগ করেন, বর্তমান মার্কিন প্রশাসনের ‘বেপরোয়া শুল্কনীতি’ ক্যালিফোর্নিয়ার অর্থনৈতিক অগ্রগতিকে হুমকির মুখে ফেলেছে। প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন প্রশাসনের উচ্চ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তিনি প্রকাশ্যে কথা বলেছেন এবং আইনি লড়াইও শুরু করেছেন।  

যুক্তরাষ্ট্রে শিল্প উৎপাদন, কৃষি, প্রযুক্তি খাত ও বিনোদন শিল্পে ক্যালিফোর্নিয়ার প্রভাব বিশাল। এর পাশাপাশি দেশটির দুটি সবচেয়ে ব্যস্ত সমুদ্রবন্দর—লং বিচ ও লস অ্যাঞ্জেলেস—এ রাজ্যেই অবস্থিত।  

ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন শুল্কনীতি অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি হওয়া প্রায় সব পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। মেক্সিকো ও কানাডার ক্ষেত্রে শুল্ক বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫ শতাংশ। চীনের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধে আরও কঠোর অবস্থান নেওয়া হয়েছে, যার ফলে চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়িয়ে সর্বোচ্চ ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় চীনও মার্কিন পণ্যের ওপর ১২৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছে।  

আইএমএফের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের জিডিপি বর্তমানে ২৯ দশমিক ১৮ ট্রিলিয়ন ডলার, চীনের ১৮ দশমিক ৭৪ ট্রিলিয়ন ডলার এবং জার্মানির ৪ দশমিক ৬৫ ট্রিলিয়ন ডলার। তুলনামূলকভাবে ক্যালিফোর্নিয়ার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার উচ্চ বলে উঠে এসেছে প্রতিবেদনে।  

জাপানের অর্থনীতি সংকুচিত হওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে দেশটির নিম্ন জন্মহার এবং বয়স্ক জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বৃদ্ধি। এর ফলে শ্রমশক্তির ঘাটতি তৈরি হয়েছে এবং সামাজিক সেবায় ব্যয় বেড়েছে।  

আইএমএফ পূর্বাভাস দিয়েছে, জাপানে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আরও কমে আসতে পারে এবং দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার বাড়াতে সময় নিতে পারে।  

গভর্নর নিউসম বলেন, 'আমরা এই অর্জনকে উদযাপন করছি বটে, কিন্তু আমাদের এই অগ্রগতি যেন অনিশ্চয়তায় পড়ে না যায়, সেটিই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। ক্যালিফোর্নিয়ার অর্থনীতিই জাতির শক্তির ভিত্তি—এটিকে রক্ষা করা জরুরি।'

ইত্তেফাক/টিএইচ