সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
The Daily Ittefaq

বন্ধুদের নিয়ে ‘দাগি’ দেখে উচ্ছ্বসিত অভিনেতা আফজাল হোসেন

আপডেট : ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ২২:০৪

নন্দিত অভিনয়শিল্পী ও পরিচালক আফজাল হোসেন সময়-সুযোগ পেলেই বন্ধুবান্ধব নিয়ে দেশের প্রেক্ষাগৃহে বসে সিনেমা উপভোগ করেন। বাইরের দেশে গেলেও সিনেমা দেখেন। একটু দেরিতে হলেও এবার ঈদে মুক্তি পাওয়া ছবি দেখা শুরু করলেন তিনি। গেল বেশ কিছুদিন ধরে আগামী ঈদের সিনেমার শুটিংয়ে ব্যস্ত তিনি। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) দলবল নিয়ে ‘দাগি’ সিনেমা দেখলেন। ছবিটি তাকে মুগ্ধও করেছে, এমন কথা তিনি তার ফেসবুকেও লিখেছেন।

শুরুতে আফজাল হোসেন ফেসবুকে লিখেছেন, ‘সারা বিশ্বে সিনেমার রূপান্তর ঘটছে। চলচ্চিত্র দিয়ে দেশের পরিচিতি তৈরি হয়। দেশের নাম ছড়িয়ে পড়তে পারে বিশ্বব‍্যাপী। দেশ অন‍্য দেশের মানুষের কাছ থেকে সমীহ পেতে পারে- আর আমরা সিনেমা দেখা, বানানো ছেড়ে দিলাম। আমাদের ঝলমলে সিনেমা জগৎটা অন্ধকারে ডুবে গেল। সৌভাগ্যের কথা অন্ধকার থেকে সিনেমা আবার উজ্জ্বল হয়ে উঠতে শুরু করেছে। এবারের ঈদে মুক্তি পাওয়া ‘চক্কর’, ‘জংলি’, ‘দাগি’ এবং ‘বরবাদ’- খুব ভালো লাগছে, ঈদের পর থেকে আজ অবধি যেখানেই যাই, এই সিনেমাগুলো নিয়ে চর্চা হতে দেখি। এটা হারানো সাম্রাজ্য ফিরে পাওয়ার মতো।’

আফজাল হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

আফজাল হোসেন মনে করেন, তারকা সিনেমা বদলে দিতে পারেন। সিনেমাও বদলে দিতে পারে তারকাকে।

সেই প্রসঙ্গ তুলে আফজাল হোসেন লিখেছেন, ‘তারকা সিনেমার চেহারা বদলে দিতে পারে। সিনেমাও বদলে দিতে পারে তারকাকে। শাকিব খান তার উদাহরণ। এই তারকা প্রথমে নিজের পরিবর্তন ঘটিয়েছেন, তারপর ক্রমাগত বদলে দিচ্ছেন তার সিনেমাগুলোকে। দেশটায় আরও কয়েকজন সাহসী পরিচালক থাকলে মোশাররফ করিম, চঞ্চল চৌধুরী, সিয়াম, নিশোরা আমাদের চলচ্চিত্রের মহা আকর্ষণ হয়ে উঠতে পারতেন। সিনেমার চেহারায় দারুণ পরিবর্তন নিশ্চয়ই আসতে পারত।’

কথা প্রসঙ্গে ‘দাগি’ নিয়ে বলতে গিয়ে আফজাল হোসেন লিখেছেন, ‘আমি দাগি দেখেছি। শিহাব শাহীনকে অতি চমৎকার নির্মাতা হিসেবে জানি, তাই আগ্রহ নিয়ে দাগি দেখতে যাই। নিশোকে নিয়ে বহু মহলে আলোচনা শুনি- সে জন্যও বন্ধুবান্ধব ঠিক করে, দাগি দেখবে। একসঙ্গে গিয়েছিলাম ৯ জন। সবাইকে মুগ্ধ করতে পেরেছে ‘দাগি’। হল থেকে বেরিয়ে দলেবলে রেস্তোরাঁয় খেতে গেছি- এ পুরো সময়টা দাগি নিয়ে অসংখ‍্য রকমের কথা হয়েছে।’

আফজাল হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

‘দাগি’ নিয়ে নিজের ভালো লাগার কথা এভাবেই লিখেছেন, ‘আমার খুব ভালো লেগেছে- আবার আগের মতোই আমাদের দেশে তৈরি একটা সিনেমা নিয়ে দীর্ঘক্ষণ সবাই হইহই রইরই আলাপ করেছি। শিহাব শাহীন মুগ্ধ করেছে তার নির্মাণের মুনশিয়ানা দিয়ে। গল্পটা এক বৈচিত্র্য থেকে আরেক বৈচিত্র্যে দৌড়ায়। থামে না। দৌড়াতেই থাকে। কী হবে এরপর- এই কৌতূহল সারাক্ষণ টিকিয়ে রাখতে পারা খুবই কঠিন কিন্তু সহজেই তা পেরেছেন শিহাব শাহীন।’

কথা বলেছেন ‘দাগি’ ছবির প্রধান অভিনয়শিল্পী আফরান নিশোকে নিয়েও। আফজাল হোসেন লিখেছেন, ‘নিশো চমকে দেওয়ার মতো সুবাতাস। এত বড় একটা চলচ্চিত্রের ভার কাঁধে নিয়ে দর্শকমনে বিশ্বস্ততা ধরে রেখে দৌড়ে চলা মোটেও সহজ কাজ ছিল না। সিনেমার পর্দাটা অনেক বড়, সেই পর্দাজুড়ে সারাক্ষণ বড় হয়ে জুড়ে যে থাকতে পারে- সেই নায়ক।’

একেবারে শেষের দিকে এসে আফজাল হোসেন ‘দাগি’ ছবির অন্য অভিনয়শিল্পীদের প্রসঙ্গও তার লেখনীতে তুলে ধরলেন। তিনি বললেন, ‘এই সিনেমার প্রত্যেক অভিনয়শিল্পীকে বিশেষভাবে মনে রাখতে হবে। চরিত্রগুলোর উপস্থাপনা অসাধারণ। প্রেমকে নতুনভাবে হাজির করা হয়েছে আর দুই নায়িকার প্রেমময়তা যেকোনো দর্শকের জন্য চমৎকার উপহার।’

নিজেকে সিনেমাপাগল উল্লেখ করে আফজাল হোসেন লিখেছেন, ‘আমি আমাদের কালে সিনেমাপাগল ছিলাম। বয়স বেড়েছে কিন্তু একের পর এক ভালো সিনেমা হতে থাকলে যৌবনের আনন্দ আবার ফিরে পেতে পারি, মনে হয়েছে। নতুন নতুন সিনেমা ঘর হোক, মানুষ সিনেমা দেখুক। নানা রকম গল্পের চর্চায় মানুষ নিত‍্যনতুন করে নিজেকে আবিষ্কার করতে পারুক- এ চাওয়া বাড়াবাড়ি রকমের নয়। ঈদের আনন্দের সঙ্গে বহুকাল পর আবার সিনেমার আনন্দ যুক্ত হয়েছে। এ যেন হারিয়ে পাওয়া। মানুষ কথা বলছে ‘বরবাদ’, ‘চক্কর’, ‘জংলি’, ‘দাগি’ নিয়ে। সিনেমা তো একধরনের স্বপ্ন রচনা। স্বপ্ন বড় হতে থাকলে মানুষও বড় হবে।’

ইত্তেফাক/এসএ