সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
The Daily Ittefaq

ফেন্সিডিল সেবনের ভিডিও ফাঁস, বিএনপি নেতার দাবি ‘সেটি কাশির ওষুধ’

আপডেট : ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১০:১০

সম্প্রতি গাজীপুর জেলার শ্রীপুর পৌর বিএনপি এক নেতার ফেন্সিডিল সেবনের দুইটি  ভিডিও সম্প্রতি ফাঁস হয়েছে। একটি ভিডিওটিতে দেখা যায়, পৌর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শেখ মারুফ আহম্মেদ একটি নিরিবিলি কক্ষে বসে আরাম করে ফেন্সিডিল সেবন করছেন। ভিডিওটি ২৬ এপ্রিল রাতে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর তা দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এবং নানা মহলে সমালোচনার ঝড় উঠতে থাকে। 

এ ঘটনায় শ্রীপুর পৌর বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া পরিলক্ষিত হতে দেখা যায়। এতে অন্যান্য বিএনপির নেতা-কর্মীদের মাঝে বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। অপর একটি ভিডিওতে দেখা যায় ঐ মারুফ আহমেদ কয়েকজন বনিতার সঙ্গে বিশেষ নৃত্যে ব্যস্ত।

শেখ মারুফ আহম্মেদ শ্রীপুর পৌর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি। তিনি এই পদটি পেয়েছেন নির্বাচিত পৌর সভাপতি অ্যাডভোকেট কাজীম উদ্দিন ব্যাপারী ওরফে কাজী খানের মৃত্যু পর। 

এসব ভিডিওর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, তার সহকর্মী তাকে কাশির ওষুধ হিসেবে ফেন্সিডিল দিয়েছিলেন এবং তিনি সেটি পান করেছেন। তার ভাষ্যমতে, এটি তার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবে একটি পক্ষ তার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে এই ভিডিও ছড়িয়ে দিয়েছে।

অন্যদিকে, শ্রীপুরে বিএনপির একাধিক সিনিয়র নেতা দাবি করেছেন, ভিডিওতে ফেন্সিডিল সেবনকারী ব্যক্তি আসলে শেখ মারুফ আহম্মেদই। তাদের ভাষ্যমতে, তিনি দীর্ঘদিন ধরে মাদক সেবন করছেন এবং মাদকাসক্ত। দলের ভেতরেও এ বিষয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। ভিডিওর একাংশে শেখ মারুফ আহম্মেদকে একটি নাইট ক্লাবে নারীদের সঙ্গে নাচতে দেখা যায়, যার কারণে সমালোচনা আরও সমালোচনার ঝড় তুঙ্গে উঠে। এ ব্যাপারে তিনি কোন বক্তব্য দেননি।

বিএনপির একাধিক নেতা বলেছেন, যারা দলের দুর্দিনে পাশে ছিলেন, তারা এখন মূল্যহীন হয়ে পড়েছেন এবং দলের জন্য ত্যাগ না করা নেতারা এখন দলের ভাবমূর্তি নিয়ে খেলছেন। তাদের মতে, দলের শুদ্ধি অভিযান প্রয়োজন, এবং মাদক সেবনে জড়িতদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল হোসেন বেপারী জানিয়েছেন, শেখ মারুফ আহম্মেদ সাবেক সভাপতি প্রয়াত কাজী খানের আত্মীয় হওয়ায়, তিনি পদাধিকার বলে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হয়েছেন। 

তবে অভিযুক্ত নেতা শেখ মারুফ আহম্মেদ তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনে বলেছেন, তার সর্দি-কাশি ছিল, এবং আবুল নামের এক কর্মী তাকে কাশির ওষুধ এনে দেন, যা খেয়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তিনি সম্পাদিত এই ভিডিওটিকে এডিট করা বলে দাবি করেন।

শ্রীপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোহাম্মদ শাহজাহান ফকির জানিয়েছেন, তিনি এ বিষয়ে অবগত নন, তবে যদি এমন কিছু ঘটে থাকে, তবে জেলা কমিটিই তার বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা নিতে পারে। 

গাজীপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব ব্যারিস্টার চৌধুরী ইসরাক আহম্মেদ সিদ্দিকী জানিয়েছেন, তিনি এ বিষয়ে কিছু জানেন না, তবে বিষয়টি তার নজরে আসলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইত্তেফাক/এএইচপি