গত দুই মাস ধরে সব মেয়াদের ট্রেজারি বিল ও বন্ডের সুদহার ধারাবাহিকভাবে বাড়লেও, সর্বশেষ নিলামে ২০ বছরের ট্রেজারি বন্ডের সুদের হার আগের বারের তুলনায় কমেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২৯ এপ্রিল ১৫ বছর ও ২০ বছরের ট্রেজারি বন্ডের নিলাম অনুষ্ঠিত হয়, যার প্রত্যেকটির মূল্য ১ হাজার কোটি টাকা। এই নিলামগুলোতে ২০ বছরের ট্রেজারি বন্ডের সুদের হার ৮ বেসিস পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১২.৪৬ শতাংশে। এর আগে এই বন্ডের সুদহার ছিল ১২.৫৪ শতাংশ।
তবে ১৫ বছরের ট্রেজারি বন্ডের সুদের হার আগের নিলামের তুলনায় বেড়েছে। এই বন্ডের সুদের হার ১২ বেসিস পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২.৪০ শতাংশে, যেখানে মার্চ মাসের নিলামে এটি ছিল ১২.২৮ শতাংশ।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, একই দিনে নিলাম হওয়া দুটি ট্রেজারি বন্ডের সুদের হারে এমন বিপরীতমুখী মুভমেন্ট খুব একটা স্বাভাবিক নয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক নন-কম্পেটিটিভ বিডের আওতায় ব্যক্তিগত বিনিয়োগকারী, প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্র্যাচুইটি ফান্ড বা যে কোনো ধরনের কল্যাণ তহবিলের কাছে বেশি পরিমাণ বন্ড বিক্রি করেছে। এর ফলে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো নিলামে যথাযথভাবে অংশ নিতে পারেনি। ফলে ট্রেজারি বন্ডের সুদের হার কমে গেছে।
বেসরকারি এক ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের প্রধান বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ২০১৬ সালের নির্দেশনা অনুযায়ী নিলামে প্রস্তাবিত ট্রেজারি বিল ও বন্ডের ৩০ শতাংশ নন-কম্পেটিটিভ ক্যাটাগরিতে এবং বাকি ৭০ শতাংশ রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি প্রাইমারি ডিলার ব্যাংকের কাছে প্রতিযোগিতামূলক হারে বিক্রি হওয়ার কথা। তবে ২০ বছরের ট্রেজারি বন্ডের সর্বশেষ নিলামে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নন-কম্পেটিটিভ খাতে ৫০ শতাংশেরও বেশি বন্ড বিক্রি করেছে। ফলে প্রাইমারি ডিলার ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে কম পরিমাণ ঋণ নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, সাধারণত ট্রেজারি বিল ও বন্ডের মাধ্যমে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে যত বেশি ঋণ নেওয়া হয়, সুদের হার ততই বাড়ে। কিন্তু এবার প্রথাগত অনুপাতে প্রাইমারি ডিলার ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে কম ঋণ নেওয়া হয়েছে বলেই বন্ডের সুদের হার কমে গেছে। তিনি বলেন, নীতিমালার বাইরে নন-কম্পেটিটিভ ক্যাটাগরিতে অতিরিক্ত বন্ড বরাদ্দের সুযোগ থাকলেও, প্রাইমারি ডিলার ব্যাংকগুলোকে এ বিষয়ে কোনো সার্কুলার বা আনুষ্ঠানিক চিঠির মাধ্যমে জানানো হয়নি।