ককটেল বিস্ফোরণ ও দেশীয় অস্ত্রের ঝনঝানিতে আতঙ্কিত রাজশাহীর চারঘাটবাসী। গত দুইদিন ধরে বিএনপির দুটি গ্রুপের মধ্যে এমন কর্মকাণ্ডে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছে তৃনমূল বিএনপি। এ বিষয়ে পৃথক পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে দুটি অবিস্ফোরিত ককটেল।
চারঘাট বাজারসহ আশে পাশের এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। যে কোন সময় ঘটে যেতে পারে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের মতো বড় ধরণের কোন ঘটনা। তবে পুলিশের দাবি বর্তমানে পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক।
স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার দিনগত রাতে চারঘাট বাজারের মন্ত্রী রোড নামক রাস্তায় জনৈক সুমন নামের একটি ব্যাক্তির সঙ্গে মোবাইল কেড়ে নেয়াকে কেন্দ্র করে মামুন গ্রুপের রাজু নামে অপর ব্যাক্তির কথা কাটাকাটি হয়। এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে।
বিষয়টি জনৈক সুমন ঘটনাটি চারঘাট পৌর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালেক ওরফে আদিলকে অবগত করেন। পরে সেই ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে মামুন পক্ষের লোকজনের সঙ্গে আদিল পক্ষের লোকজনের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরের দিন শুক্রবার প্রকাশ্যে বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে চারঘাট পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দুটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আরাফত রহমান কোকো প্রীতি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট খেলার মঞ্চ ও চেয়ার ভাঙচুর করে পালিয়ে যায় একদল দুর্বৃত্তরা। এতে উক্ত খেলাটি পণ্ড হয়ে যায়। এ ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার বিকেলে উপজেলা ও সহযোগী সংগঠনের ব্যানারে বিএনপির একটি অংশের নেতাকর্মীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে এবং চারঘাট বাজার চার রাস্তার মোড়ে প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন একাধিক নেতৃবৃন্দ।
সভায় বক্তারা তাদের বক্তব্যে কারো নাম উল্লেখ না করে চারঘাটে জনৈক ব্যাক্তির একটি ইন্ডিয়ান ব্যাংক আছেসহ বিভিন্ন ধরণের উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রদান করেন। এরপর রাত প্রায় সাড়ে ৯ টার দিকে বিএনপি নেতা আব্দুস সালেক ওরফে আদিল ও রাজশাহী জেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক সাব্বির হোসেন মুকুটের বাড়ীতে ৬টি ককটেল হামলা চালায় একদল দুর্বৃত্তরা। ৪টি ককটেল বিস্ফোরিত হলেও ২টি ককটেল অবিস্ফোরিত পড়ে থাকে। এসময় আশে পাশের এলাকায় ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এরপর উত্তেজিত আদিল গ্রুপের লোকজন গিয়ে ছাত্রদলের সাবেক পৌর সভাপতি মামুন গ্রুপের মামুন ও ৬নং ওয়ার্ড বিএনপি সাধারণ সম্পাদক সেন্টুর বাড়ী ও বাবুর বাড়িতে ভাঙচুর চালায় এবং ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
এঘটনায় আদিল ও মুকুট দাবি করে বলেন, উপজেলা বিএনপির সভাপতি জাকিরুল ইসলাম বিকুলের নির্দেশে জহুরুল ইসলাম ও মামুন তার দলবল নিয়ে আমাদের উপর ককটেল হামলা চালিয়েছে। আমাদেরকে হত্যার উদ্দেশেই মূলত এমন বোমা হামলা চালানো হয়েছে বলে তারা দাবি করেন।
অপর দিকে মামুনের ভাই মাসুদ বলেন, ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে বাড়ীতে ভাঙচুর চালিয়েছে আদিল গ্রুপের লোকজন।
উপজেলা বিএনপির সভাপতি জাকিরুল ইসলাম বিকুল বলেন, এ ঘটনায় আমাকে যে জড়িয়ে তারা যে রাজনৈতিক বক্তব্য দিচ্ছে তা ভিত্তিহীন। তারা একটি মামলা করে ককটেল ফোটানোর নাটক সাজিয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। ঘটনার সাথে জড়িত প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবি করেন তিনি।
চারঘাট মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মিজানুর রহমান বলেন, এমন ঘটনায় বর্তমান চারঘাটে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।