রোববার, ২৫ মে ২০২৫, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
The Daily Ittefaq

আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলা

হামিদা আর আকাশকে ধরেন সত্য বেরিয়ে আসবে: আদালত প্রাঙ্গণে হিটু শেখ

আপডেট : ০৫ মে ২০২৫, ১৬:২৯

বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার ৮ বছরের শিশু আছিয়া হত্যা মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। সোমবার (৫ মে) সকাল ১১টায় জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জাহিদ হাসানের আদালতে সাক্ষ্য নেওয়া হয়। এর আগে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে কারাগার থেকে আসামিদের আদালতে হাজির করা হয়।

এদিন আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণকালে অন্যান্য দিনের মতোই মামলাটির অভিযুক্ত আসামি ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের শিকার শিশুটির বোনের শ্বশুর মূল অভিযুক্ত হিটু শেখ, তার স্ত্রী জাহেদা বেগম, শিশুটির বোনের জামাই সজিব শেখ এবং সজিবের বড় ভাই রাতুল শেখ উপস্থিত ছিলেন।

এদিন মামলার প্রধান আসামি হিটু শেখ আদালত থেকে বের হওয়ার সময় সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে বলেন, সজীবের (তার ছেলে) স্ত্রী হামিদার সঙ্গে আকাশ নামে এক যুবকের অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে। ওই জেরে এ হত্যাকাণ্ড। তাদের ধরেন; তাহলে সব সত্য ঘটনা বেরিয়ে আসবে। এ সময় তিনি মামলার সঠিক তদন্ত দাবি করেন।

তবে, ১৬৪ ধারায় জবানবন্দীতে হিটু শেখ এ ঘটনার সঙ্গে তিনি একাই জড়িত বলে জানান।

বাদীপক্ষের আইনজীবী ও নারী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের পিপি মনিরুল ইসলাম মুকুল জানান, সোমবার চারজনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। তারা হচ্ছেন- মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন, হিটুর শেখের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী গ্রহণকারী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সব্যসাচী রায়, ঢাকার গুলশান থানার এসআই আনজু মনোয়ারা, মাগুরার রেকর্ড অফিসার মাগুরা সদর থানার ওসি আইয়ুব আলী।

আদালতে সাক্ষ্য দেওয়া সবাই ধর্ষণের ফলে আছিয়ার মৃত্যু হয়েছে বলে সাক্ষ্য দেন। সোমবারসহ গত ৬ কার্যদিবস একটানা সাক্ষ্যগ্রহণ চলেছে। এনিয়ে মোট ২৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হলো। এ মামলায় মোট ৩৭ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হবে। মঙ্গলবার ফরেনসিক বিভাগের দুইজন চিকিৎসকের সাক্ষ্যগ্রহণের দিন রয়েছে।

প্রসঙ্গত, মাগুরা শহরের নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে গিয়ে ৬ মার্চ ধর্ষণের শিকার হয় শিশু আছিয়া। ১৩ মার্চ ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় ধর্ষণের শিকার ৮ বছরের শিশুটি।

এ ঘটনার প্রতিবাদ ও বিচার দাবিতে সারা দেশে স্কুল-কলেজসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে নামেন। স্থানীয় আইনজীবীরাও এ ঘটনায় অভিযুক্তদের বিচার দাবির পাশাপাশি আসামিপক্ষকে কোনো প্রকার আইনি সহায়তা না দেওয়ার ঘোষণা দেন।

মামলার মূল আসামি শিশুর বোনের শ্বশুর হিটু শেখ গত ১৫ মার্চ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। যেখানে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার ঘটনায় তিনি একাই জড়িত বলে স্বীকারোক্তি দিলেও গত ১৩ এপ্রিল মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মাগুরা সদর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মামলার চার আসামির বিরুদ্ধেই অভিযোগ এনে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন।

ইত্তেফাক/এমএএস