রোববার, ২৫ মে ২০২৫, ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
The Daily Ittefaq

শীতলক্ষ্যার দুইটি খেয়া ঘাটেই সীমাহীন ভোগান্তিতে যাত্রীরা

আপডেট : ০৫ মে ২০২৫, ১৯:৩২

শীতলক্ষ্যা নদীর দুই পাড়ের অধিকাংশ মানুষ নদীপাড় হন প্রধানত দুটি খেয়াঘাট দিয়ে। এরমধ্যে একটি বন্দরে ১নং সেন্ট্রাল ঘাট এবং আরেকটি নবীগঞ্জ খেয়াঘাট। গুরুত্বপূর্ণ এ দুটি ঘাট দিয়ে কয়েক লাখ মানুষ নদীপার হলেও এ সময় তাদের পোহাতে হচ্ছে সীমাহীন ভোগান্তি। 

ট্রলারে অতিরিক্ত যাত্রী নেয়ায় ডুবে যাওয়ার ঝুঁকির পাশাপাশি যাত্রীদের সাথে ইজারাদারদের নিয়োগ দেয়া কর্মচারীদের খারাপ আচরণসহ আরও অনেক অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। তবে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ইজারাদাররা স্বাভাবিকভাবেই ঘাট পরিচালনা করে যাচ্ছেন। 

জানা গেছে, নবীগঞ্জ খেয়াঘাটে যাত্রী হয়রানির ঘটনা বেশি এবং বন্দর সেন্ট্রাল ঘাটে ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হওয়ার ঘটনা বেশি ঘটছে। দেড় বছর আগে জেটি থেকে ট্রলারে উঠতে গিয়ে বন্দর ঘাটে এক যুবকের মৃত্যুও হয়েছিলো। 

অভিযোগ করে সুমন নামে নিয়মিত নদীপার হওয়া এক যাত্রী বলেন, এই ঘাট দিয়ে এখন রীতিমতো অত্যাচার শুরু হয়েছে। একটা ছোট ব্যাগ নিলেও ঘাটে অতিরিক্ত টাকা দিতে হয়। আগে এমন ছিলনা। ৫ আগস্টের পর জাকির খানের নাম করে দিদার খন্দকার এই ঘাট ইজারা নেওয়ার পর থেকে এই অবস্থা শুরু হয়েছে। আর এই ঘাটে যারা ট্রলার চালায় তারা সবাই মদক সেবন করে। তাই তাদের হাতে কোনো যাত্রী নিরাপদ নয়। 

তাসলিমা আক্তার নামে নয়ামাটির এক পোশাক শ্রমিক বলেন, ট্রলারে একবিন্দু জায়গা ফাঁকা থাকলেও তারা ট্রলার ছাড়ে না। আমরা নারীরা অনেক সময় বলতে পারিনা যে আমাদের এভাবে নদীপার হতে কত কষ্ট হয়। বন্দরের মানুষের সবচেয়ে বড় সমস্যা এই নদী পাড় হওয়া কিন্তু কোনো সরকার আমাদের এই সমস্যার কোনো সমাধান দেয়নি। ঘাট নিয়া ব্যবসা হয় কিন্তু সেবা পাওয়া যায় না। এদিকে নবীগঞ্জ ঘাট দিয়ে নদী পাড় হতে গিয়ে প্রতিনিয়ত যাত্রীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। 

আকবর আলী নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, আমার বাড়ি বন্দর আমি প্রতিদিন নবীগঞ্জ ঘাট দিয়া নদী পার হয়ে শহরে যাই। কিন্তু এই ঘাটে যারা টাকা তোলে তারা দৈনিক কোনো না কোনো যাত্রীর সাথে ঝামেলা বাধায়। আমার সামনে একদিন এক মহিলাকে বলে রশি দিয়ে বেঁধে রাখবে। আর পুরুষ মানুষের সাথে যদি টাকা নিয়ে কখনো ঝামেলা হয় তাহলে তো লাঠিসোটা নিয়ে মারতে উঠে। 

জানা গেছে, আওয়ামীলীগের আমলে নবীগঞ্জ খেয়াঘাট পরিচালনা করতেন যুবলীগ নেতা শাহাদাৎ হোসেন সাজনুর লোকজন। তবে ৫ আগস্টের পর যুবদল নেতা সজল এই ঘাট পরিচালনার দায়িত্ব হাতে নেয়। 

এদিকে, আওয়ামীলীগ আমলে বন্দর খেয়াঘাট পরিচালনা করতেন সেলিম ওসমানের অনুসারী বিএনপি নেতা দিদার খন্দকার। তবে ৫ আগস্টের পর সেই দিদার খন্দকারই জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জাকির খানের প্রভাব খাটিয়ে বন্দর ঘাটের দখল নেন বলে জানা গেছে। 

এ ব্যাপারে দিদার খন্দকার বলেন, আমি সরকারের নিয়ম নীতি মেনেই ঘাট চালাচ্ছি। তবে আমি একা এ ঘাটের দায়িত্বে নেই। আমরা কয়েকজন মিলে ঘাট পরিচালনা করছি। তবে যাত্রীদের অভিযোগ থাকতেই পারে। তবে আমরা অতিরিক্ত টোল আদায় করি না।

ইত্তেফাক/এএইচপি