রোববার, ২৫ মে ২০২৫, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
The Daily Ittefaq

৭ মাস ধরে বেতনভাতা নেই, গ্রাম পুলিশের মানবেতর জীবনযাপন

আপডেট : ০৭ মে ২০২৫, ১৭:১৪

টাঙ্গাইলের সখিপুর উপজেলার ৬নং কালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশ বাবু কানাই রবিদাস ৭ মাস ধরে বেতনভাতা পাচ্ছেন না। ফলে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন তিনি। কোথাও তিনি প্রতিকার পাচ্ছেন না বলে তার অভিযোগ।

জানা যায়, সখিপুর উপজেলার কচুয়া গ্রামের মৃত বাবু লক্ষণ দফাদারের পুত্র বাবু কানাই রবিদাস দীর্ঘ দিন ধরে  ৬নং কালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নং ওয়ার্ডের গ্রাম পুলিশ হিসাবে কাজ করছেন। সম্প্রতি কালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ ভবন থেকে জব্দকৃত একটি মোটর সাইকেল, পুরনো জেনারেটর, চেয়ার টেবিল, ফ্যান এবং কিছু কাগজ পত্র চুরি যায়। ইউপি চেয়ারম্যান চুরির বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করলে গ্রাম পুলিশ কানাই রবিদাস উপজেলা প্রশাসনকে গোপনে অবহিত করেন। এ ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান জামাল হোসেন তার উপর ক্ষিপ্ত হন। এরপর অফিসে গেলে  হাজিরা খাতায় সই দিতে মানা করা হয়। এক পর্যায়ে তার বিরুদ্ধে অফিসে অনুপস্থিতি এবং কর্তব্য কাজে অবহেলার অভিযোগ এনে উপজেলা প্রশাসনের নিকট লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ইউপি চেয়ারম্যান। উপজেলা প্রশাসন গত ২৪ অক্টোবর দায়িত্ব ও কর্তব্য পরিপন্থী আচরণের অভিযোগে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেন। 

জবাবে কানাই রবিদাস জানান, জন্ম মৃত্যু নিবন্ধন কার্যক্রম সহ সব কাজে প্রথম স্থান অর্জন করেছেন। নৈতিকতা ও শৃঙ্খলা বিরোধী কাজ কখনো করেননি। শুধু অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে বানোয়াট অভিযোগের শিকার হয়েছেন তিনি। 

কানাই জানান, বহুবার উপজেলা প্রশাসন এবং ইউপি চেয়ারম্যানের দ্বারস্থ হয়েছেন। কিন্তু কেউ তাকে পাত্তা দিচ্ছেন না। একমাত্র আয়ের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দুই সন্তান ও স্ত্রী নিয়ে অনাহারে দিন কাটছে তার। তাকে এখন চাকরীচ্যুত করার জন্য জাল স্বাক্ষরে পদত্যাগ পত্র তৈরি করেছেন ওই ইউপি চেয়ারম্যান।  

এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান মো. জামাল হোসেন সব অভিযোগ অস্বীকার করে জানান,  গ্রাম পুলিশ কানাই লাল তাকে অশিক্ষিত চেয়ারম্যান বলে প্রায়ই উপহাস করে থাকেন। কখনোই সে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেনা। কর্তব্য কাজে অবহেলা ও আপত্তিকর আচরণের দরুন তার বিরুদ্ধে উপজেলা প্রশাসনের নিকট লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়। সেই প্রেক্ষিতেই উপজেলা প্রশাসন তার বেতনভাতা বন্ধ রেখেছেন। 

সখিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবদুল্লাহ আল রণী জানান, দায়িত্ব পালনে অবহেলার কারণে তার ভাতা বন্ধ রয়েছে। কানাই লাল উপজেলা নির্বাহী অফিসার অথবা জেলা প্রশাসকের কাছে না গিয়ে কেন সাংবাদিকের দ্বারস্থ হয় তা তিনি বুঝতে পারছেন না। সমস্যার সমাধান চাইলে তার কাছেই তাকে আসতে হবে। 

ইত্তেফাক/এএইচপি