ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা সীমান্তে গুলি বিনিময়ে সীমাবদ্ধ নেই, রূপ নিয়েছে রক্তক্ষয়ী সংঘাতে। ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে পাকিস্তানে সামরিক হামলা চালিয়েছে ভারত, অন্যদিকে এর শক্ত জবাব দিয়েছে ইসলামাবাদ। হামলায় দুই দেশ মিলে নিহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে চল্লিশের ঘর। শঙ্কা তৈরি হচ্ছে পারমাণিক হামলার, প্রশ্ন উঠছে পারমাণবিক শক্তিতে কে এগিয়ে, ভারত নাকি পাকিস্তান?
ভারত ও পাকিস্তানের দুটির প্রতিরক্ষা কৌশলে পারমাণবিক সক্ষমতার ভূমিকা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ারের সূচক ২০২৫ মতে, ভারতের পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে ১৩০ থেকে ১৪০টি। ডেলিভারি সিস্টেমের মধ্যে রয়েছে অগ্নি–থ্রি/ফাইভ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, যার পাল্লা ৩ থেকে ৫ হাজার কিলোমিটার। এছাড়া আছে মিরেজ ২ হাজার ও রাফায়েল এবং সামুদ্রিক প্রতিরক্ষায় আইএনএস আরিহান্ট।
অন্যদিকে গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার বলছে, পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যা ১৪০ থেকে ১৫০। অর্থাৎ ভারতের চেয়ে পারমাণবিক শক্তিকে বেশ এগিয়ে আছে পাকিস্তান। দেশটির ডেলিভারি সিস্টেমের মধ্যে আছে শাহিন–টু/থ্রি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাত্র, এফ–১৬ যুদ্ধবিমান, বাবর ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র।
পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ২০২৪ সালের প্রতিবেদন এবং যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বা এসিএ এর মতে, পারমাণবিক ওয়ারহেডের দিক থেকে ভারত ও পাকিস্তান দুটি দেশই প্রায় কাছাকাছি অবস্থানে রয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতে আনুমানিক ১৭২টি পারমাণবিক ওয়ারহেড রয়েছে, আর পাকিস্তানে আছে আনুমানিক ১৭০টি। এই তথ্যানুযায়ী সামান্য পিছিয়ে আছে পাকিস্তান।
তবে প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ দুটির কয়টি ওয়ারহেড ঠিক যুদ্ধ বা সংঘাতে ব্যবহারের জন্য কতটা প্রস্তুত অবস্থায় রয়েছে, তা স্পষ্টভাবে জানা যায়নি। পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের মতে, পাকিস্তান মূলত ভারতের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে, আর ভারত মনোযোগ দিচ্ছে দূরপাল্লার অস্ত্রের দিকে। মূলত চীনের সঙ্গে দেশটির উত্তেজনাকে সামনে রেখেই দূর পাল্লার অস্ত্রে নজর ভারতের।
গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ারের ২০২৫ এর রিপোর্ট বলছে, সামরিক শক্তিতে ভারত বিশ্বে চতুর্থ হলেও পাকিস্তানের অবস্থান ১২তম। যদিও এই র্যাঙ্কিংই সব শক্তিমত্তার প্রমাণ দেয় না। কারণ এর বাইরেও কৌশলগত কিছু বিষয় রয়েছে। তবে যুদ্ধ বা সংঘাতে পারমাণবিক অস্ত্র আগে ব্যবহার না করার নীতি অনুসরণ করে ভারত অন্যদিকে, আগেভাগে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের নীতি অনুসরণ করে পাকিস্তান।
