সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পদত্যাগসহ ৩ দফা দাবিতে লংমার্চ করেছে ছাত্র জনতা। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার চারবন্দ পয়েন্ট থেকে লংমার্চ শুরু হয়ে উপজেলা পরিষদের সামনে জমায়েত হয়ে আন্দোলনকারীরা বিক্ষোভ শুরু করেন।
এ সময় ছাত্র জনতা মিছিলে মিছিলে উত্তাল হয়ে ওঠে উপজেলা পরিষদ এলাকা। বিগত সরকারের কোটায় নিয়োগপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মফিজুর রহমানের অপসারণ, দুর্নীতি, অনিয়মের বিচার, চলতি মাসের ৪ তারিখ শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনে হামলায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনা, উপজেলার পর্যটন ও উন্নয়ন ধ্বংসের জন্য ইউএনও'র দায়বদ্ধতা তুলে ধরার দাবি জানান আন্দোলনকারীরা।
সুনামগঞ্জ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক ইমনুদ্দুজা ইমর বলেন, আমরা প্রথম থেকেই একটি যৌক্তিক দাবি নিয়ে আসছিলাম। আমরা যখন শান্তিপূর্ণভাবে রাস্তায় দাঁড়াই তখন সাংবাদিক ভাইদের সামনে আমাদের উপর ইউএনও'র লাঠিয়াল বাহিনী হামলা করে আমার ভাইদেরকে রক্তাক্ত করে।
তারা সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, আমরা নাকি আওয়ামী লীগ দোসরদের সাথে আঁতাত করেছি।তিনি বলেন, কারা আওয়ামী লীগ দোসরদের আঁতাত করেছে, কারা নতুন দোসর তৈরি করছে তা আচার ব্যবহার দেখেই বুঝা যাচ্ছে। এক বাহিনী গেছে আরেক বাহিনী জায়গা দখল করতে চলে আসছে। আমরা চাই একটি নতুন বাংলাদেশ, যেখানে আমরা আমাদের যৌক্তিক দাবিগুলো তুলে ধরতে পারবো এবং যথার্থ আইন মেনে আমাদের দাবিগুলো আদায় করতে পারব।
তারা আরও বলেন, আমরা কোন অযৌক্তিক দাবি নিয়ে রাস্তায় দাঁড়াইনি, আজও আমরা একটি যৌক্তিক দাবি নিয়েই দাঁড়িয়েছি। আমাদের ভাইদের উপর নির্মম হামলার পরেও আমাদের মামলাটি এখন পর্যন্ত গ্রহণ করা হয়নি। আমরা এদেশে এখনো কি নিরাপদ আছি? এখনো মনে হচ্ছে আওয়ামী লীগ দোসররা ঘাপটি মেরে বসে আছে। বিশ্বম্ভরপুরের ইউএনও উপজেলা সবচেয়ে বড় আওয়ামী লীগের দোসর। ওসি প্রটেকশন দিচ্ছে ইউএনও কে। আমাদের একটি দাবিই এই মফিজ হটাও বিশ্বম্ভরপুর বাঁচাও।
আন্দোলনকারী জনি আহমদ বলেন, আমরা একটি যৌক্তিক আন্দোলনের নেমেছিলাম। কিন্তু ইউএনও তার গুণ্ডাবাহিনী দিয়ে আমাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়, এতে আমাদের অনেকে আহত হয়েছেন। প্রশাসন একবারের জন্যও কোন খোঁজ-খবর নেয় নাই।
এদিকে, বিক্ষোভের মাঝেই ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ রেজাউল করিম। পরে তিনি আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসে আলোচনায় বসেন। তখন তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মফিজুর রহমানকে দশ কর্ম-দিবসের মধ্যে প্রত্যাহার ও হামলাকারীদের আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দেন।
সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, আমরা আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে ঊর্ধ্বতনও কর্তৃপক্ষকে জানাবো— যেন তাকে (ইউএনও) এখান থেকে বদলি করা হয়। তারা নিরাপত্তা চেয়েছে, এটি আমিও বলেছি এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহোদয় তিনিও বলেছেন। পরবর্তীতে ছাত্রদের বিরুদ্ধে কেউ যেন কোন ধরনের হামলা বা অন্য কোনভাবে ঝামেলা না করতে পারে সেজন্য যারা আইন—শৃঙ্খলার দায়িত্বে রয়েছেন তারা দেখবেন বিষয়টা।