মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
The Daily Ittefaq

দাফনের ৬ দিন পর জীবিত ফিরলেন নির্মাণশ্রমিক রহিম!

আপডেট : ১০ মে ২০২৫, ০৮:৪৩

চট্টগ্রাম নগরীর চাক্তাই খাল থেকে গত ৩ মে হাত-পা বাঁধা একটি মরদেহ উদ্ধার করে। পরে শানাক্ত হয় লাশটি নির্মাণশ্রমিক রহিমের। শনাক্ত করেন তার পরিবারও। যথারীতি গ্রামের বাড়ি ভোলায় সেই মরদেহ দাফনও হয়। কিন্তু দাফনের ৬ দিন পর সেই রহিম জীবিত ফিরে এলেন। জানালেন, পাওনাদারের ভয়ে গা-ঢাকা দিয়েছিলেন তিনি। 

বৃহস্পতিবার (৮ মে) বেরিয়ে আসে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য। সেদিন রহিমের মোবাইল নম্বর সচল পেয়ে পিবিআই কর্মকর্তারা খোঁজ নিয়ে তাকে জীবিত উদ্ধার করেন। জানা গেছে, পাওনাদারদের ভয়ে মোবাইল বন্ধ করে আত্মগোপনে ছিলেন তিনি।

পুলিশ জানিয়েছে, পাওনাদারদের ভয়ে আত্মগোপনে থাকা রহিমকে জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। লাশ শনাক্তের সময় বিকৃত হওয়ায় উবায়দুল্লাহ ভুল করে সেটিকে নিজের ছেলের লাশ ভেবেছিলেন। তদন্তে অন্য কোনো অসৎ উদ্দেশ্যের প্রমাণ মেলেনি। অন্যদিকে তার বলে যে লাশটি দাফন করা হয়েছে, এখনো সেটির পরিচয় উদ্‌ঘাটন করা সম্ভব হয়নি।

এদিকে উবায়দুল্লাহ জানান, তার ছেলে চট্টগ্রামে নির্মাণশ্রমিকের কাজ করতেন। ১ মে সকালে এক ফোন পেয়ে বাসা থেকে বের হওয়ার পর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন। তিনি ধারণা করেছিলেন, অনলাইন জুয়াড়িদের হাতে খুন হয়েছেন তার ছেলে। পুলিশও লাশটি তার কাছে হস্তান্তর করে।

মূলত ৩ মে চট্টগ্রাম নগরীর রুমঘাটা এলাকায় চাক্তাই খালে হাত বাঁধা অবস্থায় মধ্যবয়সী এক ব্যক্তির লাশ ভাসতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পরে খবর পেয়ে পুলিশ এটি উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নিয়ে যায়। পরদিন দুপুরে ভোলা থেকে আসা উবাইদুল্লাহ নামের এক ব্যক্তি লাশটি তার নিখোঁজ ছেলে রহিমের বলে শনাক্ত করেন। পরে ময়নাতদন্ত শেষে লাশটি গ্রামের বাড়ি ভোলায় নিয়ে যান উবাইদুল্লাহ। ৪ মে লাশের দাফন হয়। অন্যদিকে গত বৃহস্পতিবার মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে রহিমকে জীবিত অবস্থায় খোঁজ পায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

খালে লাশ পাওয়ার ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় মামলা হয়। ওই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মো. বাহার মিয়া বলেন, ‘আবদুর রহিমের সঙ্গে লাশের চেহারার প্রায় মিল আছে। এতে রহিমের পরিবারের সদস্যরা লাশটি তার বলে ভুলবশত নিয়ে যান। পরে রহিমকে পাওয়া যায়। আমরা তাকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। জিজ্ঞাসাবাদে লাশের সঙ্গে রহিমের কোনো সম্পৃক্ততা না পাওয়া ও অন্য কোনো উদ্দেশ্য না থাকায় তাকে পরিবারের হেফাজতে তুলে দেওয়া হয়।’

ইত্তেফাক/এপি