কুড়িগ্রামের উলিপুরে গ্রাম্য সালিসে এক নারীর চুল কাঁটার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার (৬ মে) উপজেলার তবকপুর ইউনিয়নের উত্তর সাদুল্যা রসুলপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় একাধিক সূত্র সালিসে বৈঠক ও তাতে নারীর চুল কেটে দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
ভুক্তভোগী নারীর অভিযোগ, কোনও ব্যাখ্যা দেওয়ার সুযোগ না দিয়েই সালিসের মাতব্বররা আর্থিক জরিমানা করে তার চুল কেটে দেয়। অন্যায় হয়েছে তার সঙ্গে। এই অন্যায়ের বিচার চান তিনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই ঘটনার সূত্রপাত হয় নারীর সঙ্গে তার দেবরের শারীরিক সম্পর্কের ভিডিও চিত্র ধারণ করা নিয়ে। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসলে ওই নারী এবং তার দেবরের পরিবারে কলহ শুরু হয়। স্থানীয় প্রভাবশালী মাইদুল এ বিষয় নিয়ে গ্রাম্য সালিসের ডাক দেন। গত মঙ্গলবার রাতে স্থানীয়ভাবে এই সালিস অনুষ্ঠিত হয়। সালিসে মাইদুলের নেতৃত্বে সেকেন্দার আলী, শাহীন মিয়াসহ পাঁচজনের কমিটি গঠন করা হয়। দেবর ভাবির অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ ‘প্রমাণ হওয়ায়’ দেবরকে ২০ বেত্রাঘাত এবং ভাবিকে আর্থিক জরিমানাসহ মাথার চুল কেটে দেওয়ার সিদ্ধান্ত দেয় কমিটির মাতব্বররা। সিদ্ধান্ত মোতাবেক যুবককে বেত্রাঘাত করা হয় এবং ওই নারীর চুল কেটে দেওয়া হয়। তবে নারীকে ঠিক কত টাকা জরিমানা করা হয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ভুক্তভোগী নারী বলেন, ‘স্থানীয় মাতব্বররা অন্যায়ভাবে আমার চুল কেটে দিয়ে সমাজে হেয় করেছে আমাকে। জুলুম করা হইছে আমার সঙ্গে। কেউ আমার কাছে শুনতেও আসে নাই কী করে কী হইলো! তারা বুদ্ধি করে এমন করছে। আমি সঠিক বিচার চাই।’
ঘটনার পর সাংবাদিকদের উপস্থিতির খবর পেয়ে ওই নারীর দেবরসহ গা ঢাকা দিয়েছেন সালিসে নেতৃত্বদানকারী মাইদুলও। তাদের মোবাইল নম্বরও বন্ধ পাওয়া গেছে। ফলে এ নিয়ে তাদের কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
উলিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিল্লুর রহমান জানান,‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে লোক পাঠিয়েছিলাম। সালিসে চুল কেটে দেওয়ার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। তবে ওই নারী এখনো থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের করেনি। অভিযোগ পেলেই আইনি সহায়তা দেওয়া হবে তাকে।’