রোববার, ২৫ মে ২০২৫, ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
The Daily Ittefaq

পানিপ্রবাহ নিয়ে নতুন সংঘাতের শঙ্কা

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতির পর পানিবন্টন ইস্যুতে উদ্বেগ

আপডেট : ১০ মে ২০২৫, ২১:২৫

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতির পরপরই দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের দৃষ্টি এখন নতুন এক সম্ভাব্য সংঘাতের দিকে। আর তা হলো দুই দেশের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হওয়া নদীর পানি বন্টন চুক্তি।  

স্টিমসন সেন্টারের দক্ষিণ এশিয়া প্রোগ্রামের পরিচালক এলিজাবেথ থ্রেলকেল্ড সতর্ক করেছেন যে যুদ্ধবিরতি যতটা গুরুত্বপূর্ণ, ঠিক ততটাই জরুরি হচ্ছে দ্বিপক্ষীয় জলনীতি নিয়ে কার্যকর আলোচনা। এক সাক্ষাৎকারে এলিজাবেথ থ্রেলকেল্ড বলেন, এটি ছিল পারমাণবিক যুগে সবচেয়ে গুরুতর সংঘাত। তিনি আরও বলেন, এই যুদ্ধবিরতির কোনও নিশ্চয়তা ছিল না। গত ২৪ ঘণ্টায় পরিস্থিতি যেভাবে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল,তা ছিল পারমাণবিক যুগে দুই দেশের মধ্যে অন্যতম গুরুতর সংকট।

তিনি জানান, এই মুহূর্তে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি মধ্যস্থতার জন্য উপযুক্ত সময়। কারণ দুই পরাশক্তির মধ্যে পুনরায় সামরিক উত্তেজনা বন্ধ করতে হলে, আলোচনায় বাস্তব সমস্যাগুলি অন্তর্ভুক্ত করাই একমাত্র উপায়।

বর্তমান পরিস্থিতির একটি বড় দিক হলো নদীর পানিপ্রবাহ, যা এখনও প্রচুর হলেও, আগামী কয়েক মাসের মধ্যে তা ব্যাপকভাবে কমে যাবে। এই প্রসঙ্গে থ্রেলকেল্ড বলেন, ভারতের এখনও পর্যাপ্ত অবকাঠামো নেই এই অতিরিক্ত জল অর্থবহভাবে সরিয়ে নেওয়ার। তবে ভবিষ্যতে এই সক্ষমতা অর্জন করলে, শুষ্ক মৌসুমে জল নিয়ে বিরোধ আরও তীব্র হতে পারে।

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ছয়টি অভিন্ন নদী রয়েছে। ছাব: সংগৃহিত

বিশ্লেষকদের মতে, কূটনৈতিক আলোচনায় জলবন্টন গুরুত্বপূর্ণ এজেন্ডা না হলে, যুদ্ধবিরতির অর্জন অস্থায়ী হতে পারে। কারণ ভারত ও পাকিস্তান উভয়ই কৃষি ও জনগণের পানির সরবরাহের জন্য নদীর উপর নির্ভরশীল। জল সংকট শুধু পরিবেশগত নয়, তা হয়ে উঠতে পারে একটি রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা হুমকি।

এখন পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি স্বস্তি এনে দিলেও, এলিজাবেথ থ্রেলকেল্ড ও অন্যান্য বিশ্লেষকরা মনে করছেন— যতক্ষণ না প্রকৃত রাজনৈতিক সমস্যাগুলি সমাধান হচ্ছে, ততক্ষণ যুদ্ধবিরতির স্থায়িত্ব নিয়ে খুশি হওয়া ঝুঁকিপূর্ণ। তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়েরও এখন ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ কেবল সামরিক বিরতি নয়, জল, সীমান্ত, সন্ত্রাসবাদ ও কাশ্মীর—এই চারটি মূল ইস্যুতে সমাধান ছাড়া শান্তি শুধু ক্ষণস্থায়ী ‘বিরতি’হয়েই থাকবে।

তথ্যসূত্র: আল জাজিরা

ইত্তেফাক/টিএস