শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
The Daily Ittefaq

ফের রুয়েট শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, এক বিষয়ের ফেল নিয়ে ডিপ্রেশন! 

আপডেট : ১২ মে ২০২৫, ১১:১১

নগরীর একটি ছাত্রাবাস থেকে পুলিশ রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে। মৃত শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান রুয়েটের আরবান প্ল্যানিং (ইউআরপি) বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। সে রংপুর শহরের কোতোয়ালি থানার বনানীপাড়া মহল্লার নূর ইসলামের ছেলে। 

নগরীর বোয়ালিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মেহেদী মাসুদ জানান, শুক্রবার দিবাগত রাত ১১টার দিকে খবর পেয়ে ফুদকিপাড়ার 'এবেলা ছাত্রাবাসে'র নবম তলার একটি কক্ষের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দেওয়া মেহেদী হাসানের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করছে পুলিশ ও রুয়েট কর্তৃপক্ষের। রোববার ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। 

ওসি আরও জানান, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কর্মকর্তারা লাশের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত ও ঘটনাস্থলে তদন্তের পর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়। ওসি বলেন, 'প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে মেহেদী হাসান আত্মহত্যা করেছেন। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনসহ অন্যান্য তথ্য বিশ্লেষণের পর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে। ঘটনার পুলিশি তদন্ত চলছে।' 

এদিকে রুয়েটের ছাত্র উপদেষ্টা রবিউল ইসলাম সরকার বলেন, 'দুই সিটের একটি রুমে থাকতেন মেহেদী হাসান। রুমমেট না থাকায় রুমে একাই ছিলেন মেহেদী। ছাত্রাবাসের অন্য শিক্ষার্থীরা দরজা ভেঙে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে তার ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান। পরে পুলিশকে খবর দেওয়া হলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে।' 

তিনি বলেন, 'গত শুক্রবার দুপুর ১২টা থেকে মেহেদীর মা তাকে ফোনে পাচ্ছিলেন না। এভাবে সারা দিন গড়িয়ে গেলে রাত ১১টার দিকে তিনি ছাত্রাবাসের অন্য এক ছাত্রকে ফোন করে মেহেদী রুমে আছে কি না দেখতে বলেন। তখন শিক্ষার্থীরা দেখেন যে মেহেদীর রুম ভেতর থেকে লাগানো। এরপর তারা দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে মেহেদীর লাশ দেখেন।' 

ছাত্র উপদেষ্টা জানান, মেহেদীর ব্যাচের শিক্ষার্থীরা স্নাতক শেষ করে বেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু এক বিষয়ে ফেল থাকার কারণে মেহেদী যেতে পারেননি। এ নিয়ে তার ডিপ্রেশন ছিল। তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন এবং মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। এই ডিপ্রেশনের কারণে তিনি আত্মহত্যা করতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

প্রায়ই রুয়েট শিক্ষার্থীর আত্মহত্যায় তারা উদ্বিগ্ন জানিয়ে ছাত্র উপদেষ্টা বলেন, 'এটা আসলে চিন্তার বিষয়। কয়েক ছাত্রের আত্মহত্যার পর আমরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের একজন অধ্যাপককে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়েছি। সপ্তাহে তিন দিন তিনি রুয়েটে আসেন। মানসিকভাবে ভেঙে পড়া শিক্ষার্থীরা তার কাছ থেকে পরামর্শ নিতে পারেন।'

ইত্তেফাক/টিএইচ