জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলায় চিরকুট লিখে আত্মহত্যা করেছে মেহেদী হাসান আপন (১৫) নামে এক এসএসসি পরীক্ষার্থী। বৃহস্পতিবার (১৫ মে) রাতে উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের বয়ড়া গ্রামে নিজ ঘরে গলায় ফাঁস দিয়ে ওই শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করে।
মৃত্যুর আগে সে দুই পৃষ্ঠার একটি হৃদয়বিদারক চিরকুট লিখে গেছে, যেখানে পরিবারের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিজের ব্যর্থতার বর্ণনা দেওয়া।
নিহত মেহেদী হাসান আপন বয়ড়া গ্রামের ইটভাটার শ্রমিক শিপন মিয়ার ছেলে এবং বয়ড়া ইসরাইল আহমেদ উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল। পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, আপন দুই বোনের মধ্যে বড় ভাই। তার বাবা জামালপুরের একটি ইটভাটায় এবং মা সরিষাবাড়ী উপজেলার ঝালুপাড়া এলাকায় একটি সুতার মিলে কাজ করেন।
আপনের ছোট বোন আছিয়া জানান, ঘটনার রাতে তারা একসঙ্গে রাতের খাবার খাওয়ার পর আপন তাকে দাদার ঘরে পাঠিয়ে নিজ কক্ষে দরজা বন্ধ করে দেয়। কিছুক্ষণ পর তাদের মা বাড়ি ফিরে ছেলেকে ডাকাডাকি করলেও সাড়া না পেয়ে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে ঝুলন্ত অবস্থায় আপনকে দেখতে পান। সেসময় ঘরের মধ্যেই পাওয়া যায় আপনার লেখা সেই চিরকুট। কান্নাকাটি শুনে স্থানীয়রা ছুটে এসে পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে।
চিরকুটে লেখা ছিল, ‘আমি আপনাদের অনেক কষ্ট দিয়েছি। আমি ছোট থেকে খারাপ, নিজেকে কখনও ভালো করতে পারিনি। বাবার পা ধরে ক্ষমা চাইতে পারলাম না। মা, তুমি অনেক কষ্ট করেছো, দাদা আমার জন্য নিজের সম্মান হারিয়েছে, অথচ আমি ভালো হতে পারলাম না। আপনারা সবাই আমাকে মাফ করে দিয়েন। বন্ধু, তোরা জানাজায় আসিস। আমার কাছে কারও টাকা পাওনা থাকলে মাফ করে দিয়েন। আমি দুনিয়া থেকে চলে যাচ্ছি। আপনাদের খারাপ ছেলে আর নেই।’
এ বিষয়ে সরিষাবাড়ী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাশেদ মিয়া জানান, সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয়দের সহায়তায় মরদেহ উদ্ধার করে। মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। এ ঘটনায় কোনো অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।