রাজধানীর নিউ মার্কেট এলাকার সেন্ট্রাল রোডে এক যুবককে প্রকাশ্যে কুপিয়ে জখম করেছে দুর্বৃত্তরা। রোববার (১৮ মে) রাত সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। হামলার একটি ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
আহতের নাম সাইফ হোসেন মুন্না। তিনি সেন্ট্রাল রোড এলাকার বাসিন্দা ও স্থানীয় বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে। বর্তমানে তিনি জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (নিটোর) চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
নিউ মার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম মাহফুজুল হক জানান, মুন্নার দুই হাত ও মেরুদণ্ডে গুরুতর জখম হয়েছে। তিনি বলেন, ‘ঘটনার পরপরই পুলিশের একটি টহল দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। ভুক্তভোগীর পক্ষকে অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে।’
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, সড়কের মোড়ে দুই যুবক দাঁড়িয়ে ছিলেন। হঠাৎ এক যুবক অন্যজনের ওপর চড়াও হন। কিছুক্ষণের মধ্যে দুটি মোটরসাইকেলে করে আরও দুই যুবক সেখানে যোগ দেন। মোটরসাইকেল থেকে নেমে দুজন ধারালো অস্ত্র দিয়ে মুন্নাকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। হামলার সময় পথচারী ও যানবাহন চলাচল করলেও কেউ এগিয়ে আসেনি।
পরে হামলাকারীরা চলে গেলে স্থানীয়রা মুন্নাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
স্থানীয়রা জানান, মুন্না বিএনপির ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক মঈনুদ্দীন মইনুর ঘনিষ্ঠ।
মইনুদ্দীন মইনু জানান, কলাবাগান থানার ওসি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন এবং মুন্না হামলাকারীদের শনাক্ত করেছেন। তিনি বলেন, ‘মুন্নার শারীরিক অবস্থা কিছুটা উন্নতি হলে আমরা কলাবাগান থানায় মামলা করব।’
তিনি আরও জানান, হামলাকারীদের মধ্যে দুজনকে তারা শনাক্ত করেছেন—একজন এমসি শুভ, অন্যজন রানা। মইনুর অভিযোগ, শুভকে এক মাস আগে পুলিশ অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করলেও যুবদলের একটি পক্ষ থানায় গিয়ে তাকে ছাড়িয়ে আনে।
তার ভাষায়, ‘মুন্না একজন পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির মানুষ। তার বাবা-মা কেউ বেঁচে নেই। তিনি দুই বোনকে নিয়ে নিজের বাড়িতে থাকেন। হামলার পেছনে ব্যক্তিগত শত্রুতা ও রাজনৈতিক বিরোধই মূল কারণ।’
তবে যুবদলের সাবেক সদস্য সচিব শাহ আলম সৈকত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘এই হামলার সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। যে কেউ পার্টির প্রোগ্রামে আসতে পারে বা একসঙ্গে ছবি তুলতে পারে। তাতে সে আমার অনুসারী হয়ে যায় না।’
তিনি জানান, এ ঘটনার বিষয়ে তিনি দলীয় শীর্ষ নেতাদের অবহিত করেছেন।
রমনা বিভাগের পুলিশের একটি সূত্র জানায়, স্থানীয়ভাবে প্রভাব বিস্তার ও চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে মইনু ও সৈকতের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এই বিরোধ থেকেই মুন্নার ওপর হামলা হয়ে থাকতে পারে।