বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫, ৪ আষাঢ় ১৪৩২
The Daily Ittefaq

এশিয়ায় করোনার নতুন রূপ জেএন-১ সম্পর্কে যা জানা যাচ্ছে

আপডেট : ২০ মে ২০২৫, ২১:১১

করোনা আবারও এশিয়ার বিভিন্ন দেশে মাথাচাড়া দিচ্ছে। এবার এর পেছনে রয়েছে ওমিক্রনের একটি দ্রুত ছড়ানো সাবভ্যারিয়েন্ট—জেএন-১। নতুন এই ধরনটি ২০২৩ সালের আগস্টে প্রথম যুক্তরাষ্ট্রে শনাক্ত হয় এবং পরবর্তী কয়েক মাসের মধ্যেই ১২০টিরও বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়ে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গত ডিসেম্বরে একে “ভ্যারিয়েন্ট অব ইন্টারেস্ট” হিসেবে ঘোষণা করে।

বর্তমানে জেএন-১ সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ছড়ানো কোভিড স্ট্রেইনে পরিণত হয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে পাওয়া কোভিড নমুনার ৯৪ শতাংশেই এই ভ্যারিয়েন্ট ছিল। ভাইরাসটির গঠনে প্রায় ৩০টি জিনগত পরিবর্তন ঘটেছে, যা এটিকে আরও বেশি সংক্রামক করেছে।

ভারতে এখনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ১৯ মে পর্যন্ত দেশটিতে মাত্র ২৫৭টি সক্রিয় সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে, যার বেশিরভাগ কেরালা, মহারাষ্ট্র ও তামিলনাড়ু রাজ্যে। যদিও জানুয়ারিতে একসময় তা ছিল হাজার ছাড়ানো, তবে এখন সংক্রমণ অনেকটাই কম। কর্তৃপক্ষ বলছে, অধিকাংশ রোগীর উপসর্গ মৃদু এবং হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন হয়নি। তবে সতর্ক থাকতে সবাইকে মাস্ক পরা, হাত ধোয়া ও সময়মতো টিকা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

এদিকে সিঙ্গাপুর ও হংকংয়ে পরিস্থিতি তুলনামূলক বেশি খারাপের দিকে। সিঙ্গাপুরে এক সপ্তাহে সংক্রমণ ১১ হাজার থেকে বেড়ে ১৪ হাজার ছাড়িয়েছে। হংকংয়ে ৮১টি গুরুতর সংক্রমণ ও ৩০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে, যাদের বেশিরভাগই বয়স্ক ও অসুস্থ ছিলেন।

জেএন-১ ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তদের মধ্যে শুকনো কাশি, হালকা জ্বর, গলা ব্যথা, ক্লান্তি, স্বাদ বা গন্ধ হারানো এবং কিছু ক্ষেত্রে পেটের সমস্যার মতো উপসর্গ দেখা যাচ্ছে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমানের টিকাগুলো—বিশেষ করে এমআরএনএ, ভাইরাল ভেক্টর ও প্রোটিন সাবইউনিট ভ্যাকসিন—এই ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে কার্যকর সুরক্ষা দিতে পারছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, জেএন-১ এখন পর্যন্ত অতিরিক্ত জনস্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করেনি। তবে এর দ্রুত ছড়ানোর ক্ষমতা বিবেচনায় নেওয়া হলে, অবহেলা করা যাবে না। চিকিৎসক ও গবেষকরা মনে করছেন, এটি ঠেকাতে জনসচেতনতা, স্বাস্থ্যবিধি ও টিকাদানই হতে পারে সবচেয়ে বড় অস্ত্র।

ইত্তেফাক/টিএস