ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়ক এলাকায় আবারও বাস ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (২০ মে) রাত সাড়ে ১১টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত আল ইমরান নামে একটি যাত্রীবাহী বাসের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ডাকাত দল যাত্রীদের সবকিছু লুটে নেয়। লুটপাটের সময় নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানির ঘটনাও ঘটেছে বলে কিছু যাত্রীর বক্তব্যে জানা যায়।
এ ঘটনায় মামলা করার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। বাসটি বুধবার সকালের দিকে টাঙ্গাইল সদর থানায় নেওয়া হয়। এর আগে, চলতি বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি এই মহাসড়কে ইউনিক রয়েলসের একটি বাসে ডাকাতি ও নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটে। টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানবীর আহমদ বলেন, মামলা করার প্রক্রিয়া চলছে। ডাকাত দলকে চিহ্নিত করতে পুলিশ কাজ শুরু করেছে।
বাসের চালক, সুপারভাইজার ও যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে ঢাকার আবদুল্লাহপুর থেকে আল ইমরান পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস রংপুরের উদ্দেশে যাত্রা করে। যাত্রাপথে সাভারের নরসিংহপুর, বাইপাইল, আশুলিয়া থেকে কিছু যাত্রী ওঠেন। প্রায় ১০ নারীসহ ৪৫ জন যাত্রী নিয়ে বাসটি রাত সাড়ে ১১টার দিকে টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা এলাকা অতিক্রম করে বলে জানান বাসের সহকারী আতিকুর রহমান।
যমুনা সেতুর পূর্ব প্রান্তের সংযোগ সড়কের কয়েক কিলোমিটার যাওয়ার পর যাত্রীবেশে ৮-১০ জন ডাকাত ছুরি, চাপাতিসহ দেশীয় অস্ত্রের মুখে চালকের কাছ থেকে বাসটির নিয়ন্ত্রণ নেয়। পরে তারা যাত্রী, বাসের চালকসহ সবার চোখ-মুখ বেঁধে ফেলে। যমুনা সেতুর পূর্ব প্রান্তের গোলচত্বর এলাকায় গিয়ে বাসটি ঘুরিয়ে আবার ঢাকার দিকে চলতে থাকে। চলাচলের সময় প্রত্যেক যাত্রীকে তল্লাশি করে মোবাইল, নগদ টাকা, সোনা ও অন্য মালামাল লুট করে নেয়।
বাসের চালক আবেদ আলী জানান, সারা রাতে বাসটি নিয়ে ডাকাতেরা চার-পাঁচবার টাঙ্গাইল ও চন্দ্রা-আশুলিয়া যাওয়া-আসা করে। ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে টাঙ্গাইল শহরের বাইপাস সড়কের শিবপুর এলাকায় বাসটি রেখে ডাকাত দল চলে যায়। পরে যাত্রীদের নিয়ে সকালে টাঙ্গাইল সদর থানায় যান বলে জানান তিনি।
বাসের যাত্রী বগুড়ার আদমদীঘির জুয়েল মিয়া জানান, টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য নারী যাত্রীদের তল্লাশির সময় শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটে। তার চোখ-মুখ বাঁধা ছিল। তবে তিনি নারী যাত্রীদের কান্নাকাটি ও কাকুতি-মিনতি শুনতে পান। আরেক যাত্রী রংপুরের কাউনিয়া এলাকার বাসিন্দা আকাশ মিয়া জানান, হাত-পা, চোখ-মুখ বেঁধে ডাকাতেরা প্রত্যেক যাত্রীর দেহ কয়েকবার তল্লাশি করে। যার যা কিছু ছিল সব নিয়ে যায়।
এর আগে, চলতি বছরের গত ১৭ ফেব্রুয়ারি এই মহাসড়কে একটি বাসে ডাকাতি ও নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানি এবং ২০২২ সালের ২ আগস্ট একই কায়দায় কুষ্টিয়াগামী একটি বাসে ডাকাতি ও নারী যাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।