মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২
The Daily Ittefaq

কুষ্টিয়ায় বেতন বৈষম্যে শ্রমিক আন্দোলন উত্তাল, দুই কারখানায় ছুটি ঘোষণা

আপডেট : ০৩ জুন ২০২৫, ১৮:০০

কুষ্টিয়ায় বিআরবি গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রির এমআরএস নামক কারখানার নয় শতাধিক শ্রমিক-কর্মচারীরা বেতন বৈষম্য দূরীকরণসহ অন্যান্য দাবি আদায়ে তুমুল আন্দোলনে নেমেছে। গত ১ জুন কর্মবিরতি পালনসহ কারখানা চত্বরে লাগাতার বিক্ষোভ ও অবরোধ কর্মসূচী পালন করে আসছে শ্রমিকরা। 

এদিকে মঙ্গলবার (৩ জুন) সকালে পরিস্থিতি চরম বেগতিক ও শ্রমিকদের বাধার মুখে কর্তৃপক্ষ বিআরবি ক্যাবল ইন্ডাস্ট্রি ও কিয়াম মেটাল কারখানা সাময়িক ছুটি ঘোষণা করে। কিন্তু তা স্বত্বেও বৈষম্য নিরসন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলনে অনড় থাকার ঘোষণা দেন শ্রমিকরা। 

জানা যায়, কুষ্টিয়ার বিসিক শিল্প নগরীতে অবস্থিত বিআরবি গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রির অন্তর্ভুক্ত এমআরএস নামক প্লাইউড উৎপাদনকারী কারখানায় কর্মরত নয় শতাধিক শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন বৈষম্য, পাওনা ছুটি মঞ্জুর ও বিনা নোটিশে শ্রমিক বরখাস্তসহ চাকুরীচ্যুতি বন্ধে আন্দোলনে নামে শ্রমিকরা। 

শ্রমিকদের অভিযোগ, একই মালিকের দ্বারা পরিচালিত অন্যান্য কারখানায় ইনক্রিমেন্টসহ বর্ধিত বেতন সমন্বয় করা হলেও এমআরএস কারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের বেতন না বাড়িয়ে চরম বিমাতাসুলভ আচরণ করছে কর্তৃপক্ষ। এতে অসন্তোষসহ ক্ষোভে ফুঁসে উঠে শ্রমিকরা-কর্মচারীরা। 

আন্দোলনরত শ্রমিকরা জানায়, বিআরবি গ্রুপের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের ২০২৪ সালে বার্ষিক ইনক্রিমেন্টসহ বেতন বৃদ্ধি করা হলেও এমআরএস নামক শিল্প প্রতিষ্ঠানে কর্মরত নয় শতাধিক শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন বাড়ানো হয়নি। এছাড়া বিনা নোটিশে চাকুরীচ্যুতসহ পাওনা ছুটি ভোগ করতে দেয়া বলে অভিযোগ করেন শ্রমিকরা। ফলে বেতন বৈষম্য দূরীকরণসহ যৌক্তিক দাবী আদায়ে শ্রমিকরা লাগাতার বিক্ষোভ প্রদর্শন ও অবরোধ কর্মসূচী করে আসছে। 

এদিকে, তুমুল আন্দোলনে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার উপক্রম হলে গতকাল মঙ্গলবার সকালে বিআরবি গ্রুপের দুটি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তা স্বত্বেও শ্রমিকদের আন্দোলন থামেনি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও সেনা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে আসেন। এসময় আন্দোলরত শ্রমিকরা তাদের দাবি-দাওয়ার বিষয়গুলো তুলে ধরেন। বেতন বৈষম্য নিরসন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলমান রাখার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন শ্রমিকরা। এসময় সেনা কর্মকর্তারা ধৈর্যের সঙ্গে শ্রমিকদের কথা শোনেন। পরে পুলিশ ও সেনা বাহিনীর হস্তক্ষেপে আন্দোলনরত শ্রমিক-কর্মচারীদের সঙ্গে বিআরবি গ্রুপের চেয়ারম্যান মজিবর রহমানসহ অন্যান্য কর্মকর্তা বৈঠকে বসেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বৈঠক চলছিল।

এবিষয়ে বিআরবি গ্রুপের মহা-ব্যবস্থাপক দ্বীপেন কুমার দাস জানান, আন্দোলনরত শ্রমিকদের দাবি-দাওয়া নিরসন হয়ে গেছে। তবে কি ধরনের সমঝোতা বা নিরসন হয়েছে তা তিনি স্পষ্ট করে কিছু বলেননি।

ইত্তেফাক/এএইচপি