শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫, ২৭ আষাঢ় ১৪৩২
The Daily Ittefaq

সব করদাতার জন্য অনলাইনে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করার পরিকল্পনা

আপডেট : ০৪ জুন ২০২৫, ১১:৪৭

আগামী অর্থবছর থেকে দেশের সব করদাতার জন্য আয়কর রিটার্ন অনলাইনে দাখিল বাধ্যতামূলক করা হতে পারে। বাজেট বক্তৃতায় এমন পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থবিষয়ক উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।

তিনি জানান, অনলাইন পদ্ধতিতে রিটার্ন জমা দেওয়া করদাতাদের মধ্যে ইতিবাচক সাড়া ফেলেছে। তাই আগামী বছর থেকে স্বাভাবিক ব্যক্তি শ্রেণির সব করদাতার জন্য এই বাধ্যবাধকতা কার্যকর করার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। একই সঙ্গে কোম্পানি করদাতাদের অনলাইন রিটার্ন দাখিলে সক্ষমতা বাড়াতে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান উপদেষ্টা।

বর্তমানে দেশের ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর অঞ্চলের সব সরকারি কর্মকর্তা, তফসিলি ব্যাংক এবং কিছু বড় প্রতিষ্ঠানের করদাতাদের জন্য ইতোমধ্যে রিটার্ন অনলাইনে দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সর্বশেষ করবর্ষে প্রায় ১৬ লাখ করদাতা অনলাইনে রিটার্ন জমা দিয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

তবে উচ্চ মূল্যস্ফীতির এই সময়ে ব্যক্তি শ্রেণির করদাতাদের বার্ষিক করমুক্ত আয়সীমা অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। অর্থ উপদেষ্টা জানিয়েছেন, সাধারণ করদাতাদের জন্য করমুক্ত আয়ের সর্বোচ্চ সীমা আগের মতোই ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা থাকছে।

অন্যদিকে, ব্যক্তিশ্রেণির কর কাঠামোতে কিছুটা পরিবর্তনের প্রস্তাবও বাজেটে এসেছে। সর্বোচ্চ করহার ৩০ শতাংশ নির্ধারণ করে একটি নতুন স্তর যুক্ত করা হয়েছে। কর কাঠামোর স্তরেও পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে।

আগামী দুই অর্থবছরের জন্য করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়ানোর ইঙ্গিতও দিয়েছেন উপদেষ্টা। ২০২৬–২৭ অর্থবছর থেকে করমুক্ত আয়ের সীমা ২৫ হাজার টাকা বাড়িয়ে ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

এনবিআরের তথ্যমতে, বর্তমানে দেশে কর শনাক্তকরণ নম্বরধারীর (টিআইএন) সংখ্যা ১ কোটি ১১ লাখের বেশি। তবে এর মধ্যে মাত্র ৪০ লাখের মতো করদাতা নিয়মিত রিটার্ন জমা দেন।

এদিকে, টানা উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে সাধারণ মানুষের প্রকৃত আয় কমে যাওয়ার বিষয়টি বাজেট আলোচনায় গুরুত্ব পেয়েছে। গত এক বছর ধরে গড় মূল্যস্ফীতির হার ১০ শতাংশের ওপরে রয়েছে, অথচ একই সময় মজুরির বৃদ্ধির হার আট থেকে নয় শতাংশে সীমাবদ্ধ থেকেছে। এতে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়লেও তাদের ক্রয়ক্ষমতা কমে গেছে বলে বিশ্লেষকদের অভিমত।

ইত্তেফাক/টিএইচ