শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫, ২ শ্রাবণ ১৪৩২
The Daily Ittefaq

ঈদকে কেন্দ্র করে রেমিট্যান্সে গতি, জুনের ৩ দিনেই এসেছে ৬০ কোটি ডলার

আপডেট : ০৫ জুন ২০২৫, ১১:৩৬

পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে প্রবাসী আয় প্রবাহে দেখা দিয়েছে ঊর্ধ্বগতি। চলতি জুন মাসের প্রথম তিন দিনেই দেশে এসেছে ৬০ কোটি ৪০ লাখ মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ রেমিট্যান্স। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ৭ হাজার ৪২৯ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২৩ টাকা হিসেবে)।

বৃহস্পতিবার (৫ জুন) বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকাশিত সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, ঈদুল আজহার মতো বড় ধর্মীয় উৎসবকে ঘিরে প্রবাসীদের দেশে অর্থ পাঠানোর প্রবণতা বাড়ে। কোরবানির পশু কেনা, নতুন পোশাক, উপহার বা পারিবারিক ব্যয়ের জন্য স্বজনদের হাতে বাড়তি অর্থ পৌঁছে দিতে এই সময়ে রেমিট্যান্সে বাড়তি গতি লক্ষ্য করা যায়। এবারও সেই চিত্রের ব্যতিক্রম হয়নি।

অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, প্রবাসী আয় শুধু প্রবাসীদের পরিবারের জীবনযাত্রার মানই উন্নত করে না, দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতে তা গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। ঈদ উপলক্ষে এই অর্থ গ্রামীণ অর্থনীতিতে সরাসরি প্রবাহিত হয়ে ব্যবসা-বাণিজ্যেও চাঙ্গা ভাব তৈরি করে।

সরকার এবং বাংলাদেশ ব্যাংক রেমিট্যান্স প্রেরণ সহজ করতে বৈধপথে অর্থ পাঠানোর জন্য বিভিন্ন প্রণোদনা দিচ্ছে। পাশাপাশি ডিজিটাল চ্যানেলের সহজলভ্যতার কারণে অনেক প্রবাসী এখন হুন্ডি এড়িয়ে ব্যাংকিং চ্যানেলে অর্থ পাঠাতে উৎসাহিত হচ্ছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, এর আগে মে মাসে দেশে এসেছে ২৯৭ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স, যা দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মাসিক প্রবাসী আয়। এর পরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩৬ হাজার ৫৩১ কোটি টাকারও বেশি। আর চলতি বছরের মার্চে, ঈদুল ফিতর সামনে রেখে এসেছিল ইতিহাসের সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স—৩২৯ কোটি ৫৬ লাখ ডলার।

বিশ্লেষকদের মতে, ঈদকেন্দ্রিক ব্যয় বাড়া এবং প্রবাসীদের দেশে অর্থ পাঠানোর আগ্রহ বৃদ্ধি পাওয়াই এই প্রবাহ বৃদ্ধির প্রধান কারণ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে ৩ জুন পর্যন্ত মোট ২ হাজার ৮১১ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ২৯ দশমিক ৮০ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ২ হাজার ১৬৬ কোটি ডলার।

বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর টানা আট মাস দুই বিলিয়ন ডলারের ওপরে রেমিট্যান্স এসেছে। আর মার্চ মাসে সেই অঙ্ক পেরিয়েছে তিন বিলিয়ন ডলারের ঘর। এতে রেমিট্যান্স খাতে ইতিবাচক ধারাবাহিকতা বজায় রয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

ইত্তেফাক/টিএইচ