এক সপ্তাহ পর রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা সীমিত পরিসরে চালু হয়েছে। মঙ্গলবার (১০ জুন) সকালে জরুরি সেবার বাইরে বাড়তি চিকিৎসা না পেয়ে অনেক রোগী ফেরত যাচ্ছেন। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন তারা।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, কমপক্ষে অর্ধশত রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন জরুরি বিভাগে। তাদের মধ্যে নারী, শিশু ও বৃদ্ধ রয়েছেন। জরুরি বিভাগে সেবা চালুর পর হাসপাতালে আসেন এই রোগীরা। তবে চক্ষুবিজ্ঞান হাসপাতালের পরীক্ষা-নিরীক্ষার যন্ত্রপাতি ও অন্যান্য সেবা বন্ধ থাকায় বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরতে হচ্ছে অনেক রোগীকে।
বছিলার বাসিন্দা মো. জসীম উদ্দিন বলেন, গত শুক্রবার ছেলে ইমাম হোসেনকে নিয়ে চক্ষুবিজ্ঞান হাসপাতালে আসেন তিনি। তার ছেলের চোখের বেশ কিছু পরীক্ষা দরকার। তবে চক্ষুবিজ্ঞান হাসপাতালের বেশির ভাগ সেবা বন্ধ থাকায় তাদের অন্য কোথাও গিয়ে চোখের পরীক্ষা করার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
তিনি আরও বলেন, শিশু হাসপাতাল ও ঢাকা মেডিকেলেও গিয়েছিলাম ছেলেকে নিয়ে। তবে বাচ্চা মেশিন দেখলে কান্নাকাটি শুরু করে। অন্য হাসপাতালে পরীক্ষা করাতে না পেরে এখানে আবার ফেরত এসেছি। বেসরকারি কোনো হাসপাতালে যাওয়ার সাহস হচ্ছে না। অনেক খরচ। এখানে পরীক্ষা করাতে পারলে সবচেয়ে ভালো হতো। এ অবস্থায় বাচ্চার চোখ নিয়ে শঙ্কায় আছি।
রাজবাড়ী থেকে আসা মো. লিয়াকত শিকদার বলেন, চোখ থেকে অনবরত পানি পড়ায় এখানে এসেছেন তিনি। তবে জরুরি বিভাগে গেলে শনিবার আসার পরামর্শ দেওয়া হয় তাকে।
জরুরি বিভাগের নার্সদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, একান্ত জরুরি ছাড়া চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না অন্য রোগীদের৷ অনেক রোগী এ জন্য ফেরত যাচ্ছেন। সেবা পুরোপুরি চালু হলে আবারও সব রোগী চিকিৎসা পাবেন। বহির্বিভাগে যেসব রোগীর চিকিৎসা প্রয়োজন, তাদের প্রায় সবাই ফেরত যাচ্ছেন।
হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জানে আলম গণমাধ্যমকে বলেন, আপাতত জরুরি সেবা নিশ্চিতের চেষ্টা করছি আমরা। আগামী শনিবার থেকে সব সেবা চালুর চেষ্টা করছেন বলে জানান তিনি।
হাসপাতালে আজও পুলিশ ও আনসার সদস্যদের অবস্থান করতে দেখা গেছে। নূর আলম নামের একজন আনসার সদস্য বলেন, হাসপাতালের জরুরি সেবা ছাড়া অন্য সেবা এখনো বন্ধ আছে। জরুরি প্রয়োজন না হলে রোগীদের শনিবার আসার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, চিকিৎসক ও কর্মচারীদের সঙ্গে চিকিৎসাধীন জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিদের মারামারি ও সংঘর্ষের জের ধরে গত ২৮ মে সকাল থেকে ঢাকার জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে অচলাবস্থা বিরাজ করছে। এখনও পর্যন্ত হাসপাতালটিতে পুরোপুরি চিকিৎসাসেবা চালু করা যায়নি।