দিনাজপুরের ফুলবাড়ীসহ আশপাশের এলাকায় প্রখর তাপদাহ আর তীব্র গরমে জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠেছে। গত পাঁচদিন ফুলবাড়ীসহ এ অঞ্চলে তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রয়েছে। যা মৃদ্যু তাপপ্রবাহ হিসেবে বিবেচিত আবহাওয়া অধিদপ্তরের কাছে। বৈরি আবহাওয়ার কারণে বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবী মানুষ।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) দুপুর ১২টায় দিনাজপুর জেলার তাপমাত্রা ৩৬ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করেছে দিনাজপুর আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৬১ শতাংশ।
আজ বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে পৌরশহর ঘুরে দেখা যায়, প্রচন্ড গরমে জনজীবনে নেমে এসেছে স্থবিরতা। শহরের প্রধান প্রধান সড়কে যানবাহনসহ মানুষের চলাচল সামান্য দেখা যায়। কাজের প্রয়োজনে যারা বেরিয়েছেন, তাদের অধিকাংশই ছাতা বা মাথায় গামছা ব্যবহার করছেন। মার্কেটগুলোতে ক্রেতা নেই বললেই চলে।
তবে এই অসহনীয় গরমে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। তীব্র গরম থেকে স্বস্তি পেতে মানুষ বৃষ্টির অপেক্ষায় দিন গুনছেন। তীব্র গরমের কারণে স্থানীয় হাসপাতাল ও ক্লিনিকে অসুস্থ রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
পৌরএলাকার কাঁটাবাড়ী গ্রামের রিকশা চালক আফজাল হোসেন বলেন, তীব্র রোদের কারণে ঘামে জামাকাপড় ভিজে যাচ্ছে। গরমে শরীর ক্লান্ত হয়ে যায়। দুই-তিনবারের বেশি ভাড়া মারা যাচ্ছে না। কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে রিকশা চালাতে হচ্ছে। আবার রিকশা না চালালে পেটে ভাত জুটবে না।
দিনাজপুর আবহাওয়া দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. তোফাজ্জল হোসেন বলেন, বর্তমানে দিনাজপুর জেলার ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। দিনে তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি থেকে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উর্ধ্বে ওঠানামা করছে। এ অবস্থায় চলমান তাপপ্রবাহ আরও কিছুদিন থাকতে পারে।
এদিকে তীব্র গরমের কারণে ফুলবাড়ীসহ আশপাশের এলাকায় জ্বর, সর্দি-কাশি, পেটের ব্যাথা, ডায়রিয়া, পাতলা পায়খানা রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকারি হাসপাতাল ও বেসরকারি ক্লিনিকগুলোতে ভিড় বেড়েছে এসব রোগীর।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, কয়েকদিন আগে বহির্বিভাগে প্রতিদিন গড়ে দুইশতাধিক রোগী চিকিৎসা নিলেও গত ৩-৪দিন থেকে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে কয়েকগুণ। বেশির ভাগ রোগীই জ্বর, সর্দি-কাশি, পেটের ব্যাথা, ডায়রিয়া, পাতলা পায়খানা রোগে আক্রান্ত।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মশিউর রহমান বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসা সব ধরনের রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। রোগীর চা বেড়ে যাওয়ায় স্বল্প সংখ্যক চিকিৎসদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবে গরমে পানিশূন্যতা ও হিটস্টোক থেকে নিজেদের রক্ষা করতে বেশি করে পানি পান করাসহ মাথায় ছাতা দিয়ে চলাফেরা করা।