ঈদুল আযহার ছুটি শেষে রাজধানী ঢাকা ও বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামে ফিরতে শুরু করেছেন ঈদ করতে বাড়িতে আসা মানুষেরা। বেসরকারি অফিসের ছুটি শেষ হলেও সরকারি হিসাব অনুযায়ী ঈদের ছুটি চলবে আরও দুই দিন। তবে কেউ কেউ যানজট এড়াতে পরিবার নিয়ে আগেই ফিরছেন কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মিরসরাই সদর, বারইয়ারহাট পৌরসভা, মিঠাছরা বাজার, বড়তাকিয়া বাজার ও বড় দারোগারহাট স্টপেজে চট্টগ্রামমুখী যাত্রীদের ভিড় দেখা গেছে। মহাসড়কে যাত্রীবাহী বাস কম থাকার পাশাপাশি অতিরিক্ত ভাড়াও নিতে গেছে বাস চালকদের।
বৃহস্পতিবার (১২জুন) বিকেলে মিরসরাই সদর, ঠাকুরদিঘী বাজার, চৈতন্যেরহাট বিশ্বরোডের চট্টগ্রামমুখী অংশে দেখা যায় যাত্রীদের প্রচুর ভিড়। মহাসড়কের চট্টগ্রামমুখী অংশে লোকাল বাস চলছে হাতেগোনা। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকেও বাসে সীট পাওয়া যাচ্ছে না। ২৫-৩০ মিনিট পর বাস আসলেও তাতে উঠার জন্য হুমরী খেয়ে পড়ছেন যাত্রীরা। উপজেলার বারইয়ারহাট থেকে চট্টগ্রাম নগরীর মাদারবাড়ী পর্যন্ত চয়েস পরিবহনে প্রতি সীটে আগে ঈদের আগে ১৩০ টাকা নেওয়া হলেও এখন নেওয়া হচ্ছে ১৫০ টাকা আর উত্তরা পরিবহনে আগে ৭০-৮০ টাকা নিলেও তারা এখন গেইট লক সার্ভিসের নামে ভাড়া নিচ্ছে ১৫০ টাকা করে। এছাড়া ফেনী থেকে চট্টগ্রাম শহরমুখী বাসগুলো আগের ভাড়ার চেয়ে ৩০-৫০ টাকা বেশী নিচ্ছেন বলে অভিযোগ যাত্রীদের।
মিরসরাই সদরে বাসের জন্য অপেক্ষায় থাকা মো. রিয়াজ উদ্দিন বলেন, চট্টগ্রাম শহরে যাওয়ার জন্য ১ঘন্টা দাঁড়িয়ে থেকেও বাসের সীট খালি পাচ্ছি না। ২৫-৩০ মিনিট পর একটি বাস আসলেও সেটি ঘিরে ধরেন শতাধিক যাত্রী। এতে করে সীট পাওয়া অনেক কষ্টকর হয়ে পড়েছে। বাস সংকটের পাশাপাশি ঈদের ৬দিন পরও অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে লোকালবাসগুলো। ৩০-৫০ টাকা অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হচ্ছে যাত্রীদের।
বাসের জন্য অপেক্ষায় থাকা যাত্রী খোকন বলেন, প্রতিদিন চয়েস গাড়ির সীট খালি পাওয়া গেলেও আজ দুই ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও বাস পাইনি। ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা সিডিএম ট্রাভেলস পরিবহনের বাসগুলো আগে মিরসরাই থেকে ৭০-৮০ টাকায় চট্টগ্রাম শহরে যাত্রী নিলেও ঈদ উপলক্ষে তারা ভাড়া নিচ্ছে ১০০-১২০ টাকা। তাও সীট পাওয়া যাচ্ছে না। বাস না পেয়ে অনেকটা বাধ্য হয়ে তিনি একটি মাইক্রোবাসে ২০০ টাকা ভাড়া দিয়ে চট্টগ্রাম শহরে যাওয়ার জন্য উঠেন।
চয়েস পরিবহনের লাইনম্যান মো. ইউসুফ বলেন, লাইনে ৭০-৮০টি গাড়ি থাকলেও সচল আছে ৫০-৬০টি। তার মধ্যে প্রায় ৩৫টি বাস ঈদের আগে গার্মেন্টস শ্রমিকদের নিয়ে চট্টগ্রাম থেকে উত্তরবঙ্গে গেছে। সেগুলো এখনো আসেনি। এ কারণে বাস কিছুটা কম। চট্টগ্রাম থেকে আসার সময় ঈদের দুই দিন আগে ও দুই দিন পরে ভাড়া ১৩০ টাকার স্থলে ১৫০ টাকা নেওয়া হয়। এরপর অতিরিক্ত ভাড়া নিতে নিষেধ করা হয়েছে চালকদের। তারপরও কোন চালক বা কন্ট্রাকদার অতিরিক্ত ভাড়া যদি আদায় করার প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে চালক সমিতির পক্ষ থেকে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জোরারগঞ্জ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরকার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ঈদের ছুটি শেষে নির্বিঘ্নে কর্মস্থলে ফিরছেন মানুষ। মহাসড়কে এবার ঈদের আগে ও পরে কোন যানজট ছিলো না। মহাসড়কে যাত্রীবাহী বাস কম থাকা ও অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে আমি অবগত নই। খোঁজ নিয়ে উপজেলা প্রশাসনের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।