শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২
The Daily Ittefaq

ইরানে হামলার পর বিশ্ববাজারে তেলের দাম ঊর্ধ্বমুখী

আপডেট : ১৩ জুন ২০২৫, ১০:৫৪

মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ায় বিশ্ববাজারে তেলের দাম হঠাৎ করেই চরম ঊর্ধ্বগতির দিকে যাচ্ছে। ইরানে সাম্প্রতিক হামলার পরপরই ব্রেন্ট ক্রুড ও নিউইয়র্কের লাইট সুইট অপরিশোধিত তেলের দাম ১০ শতাংশের বেশি বেড়েছে।

শুক্রবার (১৩ জুন) বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, এ পর্যন্ত ইরান পাল্টা কোনো হামলা চালায়নি, তবে প্রতিশোধের প্রস্তুতি সম্পন্ন করে রেখেছে। দেশটি যে কোনো মুহূর্তে জবাবি হামলা চালাতে পারে বলে জানানো হয়েছে।

বিশ্লেষকরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, ইরান-ইসরাইলের মধ্যে সরাসরি যুদ্ধ শুরু হলে তা মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে জ্বালানি সরবরাহে বড় ধরনের বিঘ্ন ঘটাবে। এ অঞ্চল থেকে সরবরাহকৃত অপরিশোধিত তেল বিশ্ব অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই শুধু পেট্রোল ও ডিজেলের মূল্য নয়, খাদ্যসহ দৈনন্দিন বিভিন্ন ভোগ্যপণ্যের দামও এতে প্রভাবিত হবে।

হরমুজ প্রণালীর বিপদের আশঙ্কা

বিশ্বজুড়ে তেলের পরিবহনের জন্য হরমুজ প্রণালী একটি গুরুত্বপূর্ণ রুট। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, যদি সংঘাত বাড়তে থাকে, তাহলে ইরান হরমুজ প্রণালী ব্যবহার করে তেল পরিবহনে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।

বিশ্বের প্রায় ২০ শতাংশ অপরিশোধিত তেল এই প্রণালী দিয়ে সরবরাহ হয়। ইরান যদি এখানে হামলা চালায় বা নৌ-পরিবহন ব্যাহত করে, তাহলে দিনে কয়েক মিলিয়ন ব্যারেল তেলের সরবরাহ বন্ধ হয়ে যেতে পারে, যা বৈশ্বিক বাজারে মারাত্মক প্রভাব ফেলবে।

জ্বালানি বিশ্লেষক ভান্দনা হারি বিবিসিকে বলেন, “এই পরিস্থিতি অত্যন্ত স্পর্শকাতর ও বিস্ফোরক। এর আগে গত এপ্রিল ও অক্টোবরেও ইরান ও ইসরাইল একে অপরকে লক্ষ্য করে হামলা চালালেও তা দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে এবার তা দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধেও রূপ নিতে পারে।”

বাজারে উদ্বেগ ও অস্থিরতা

এমএসটি ফাইন্যানশিয়াল-এর জ্বালানি গবেষণা প্রধান সাওল কাভোনিক জানান, বাজারে যেটি এখন দেখা যাচ্ছে, তা মূলত প্রাথমিক ঝুঁকির প্রতিক্রিয়া। তবে আগামি এক-দুদিনের মধ্যেই স্পষ্ট হবে, পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে। সংঘাতের গভীরতা ও স্থায়িত্বের ওপর নির্ভর করেই বাজারের প্রকৃত অবস্থা নির্ধারিত হবে।

ইত্তেফাক/টিএইচ